কানে ইয়ারফোন থাকায় ট্রেন আসার শব্দ শুনতে না পেয়ে কাটা পড়েছেন দুই জন
নরসিংদীতে এক দিনে পৃথক পৃথক স্থানে ট্রেনের নিচে কাটা পড়ে তিন যুবকের মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (৮সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টায় ঢাকা-সিলেট-চট্রগ্রাম রেলপথের নরসিংদী পৌর এলাকার তরোয়া ও পলাশ উপজেলার জিনারদীতে দুটি ঘটনা ঘটে।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মো. ইমায়েদুল জাহেদী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহতরা হলেন- নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদী থানার মহিষাশুরা ইউনিয়নের খিলগাঁও গ্রামের আইয়ুব আলী মিয়ার ছেলে সোহাগ মিয়া (২৭), ফেনির দাগনভুইয়ার মোহাম্মদপুর এলাকার আসাদুজ্জামান নান্নুর ছেলে কাজী নজরুল ইসলাম বাবর (২১) ও একই এলাকার মো. হানিফ খানের ছেলে মোর্শেদ খান (১৭)।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সম্পর্কে মামাতো ফুফাতো ভাই দুই যুবক সন্ধ্যায় কানে ইয়ারফোন দিয়ে মুঠোফোনে কথা বলতে বলতে শহরের তরোয়া এলাকায় রেললাইন ধরে হাঁটছিলেন। এ সময় সিলেট থেকে ছেড়ে আসা আন্তনগর জয়ন্তিকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ঢাকার দিকে যাচ্ছিল। তরোয়া এলাকা অতিক্রম করার সময় ট্রেনটি বেশ কয়েকবার হুইসেল দিলেও দুই যুবকের কানেই এয়ারফোন থাকায় ট্রেনটির হুইসেলের শব্দ তাদের কানে পৌঁছায়নি। ট্রেনটি আসতে দেখে আশপাশের লোকজনও চিৎকার করে তাদের ডাকতে থাকলে মুহূর্তের মধ্যেই ট্রেনটির নিচে কাটা পড়েন ওই দুই যুবক। এতে ঘটনাস্থলেই তাদের মৃত্যু হয়।
এদিকে স্থানীয় লোকজনের কাছ থেকে খবর পেয়ে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে দুজনের লাশ উদ্ধার করে রেলওয়ে পুলিশ। সেখানে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরির পর তাদের লাশ নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে নিয়ে আসা হয়। পরে মো. ওমর ফারুক নামের তাদের এক স্বজন ও সহকর্মী ওই ফাঁড়িতে গিয়ে দুই লাশের পরিচয় শনাক্ত করেন।
নিহতদের স্বজন ওময় ফারুক জানায়, নিহত বাবর ও মোর্শেদ নরসিংদীতে বসবাস করে তার সঙ্গে একটি লুঙ্গির কারখানায় কাজ করতেন। হাঁটতে যাওয়ার কথা বলে কারখানা থেকে বের হয়েছিলো তারা।
নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইমায়েদুল জাহেদী জানান, দুর্ঘটনার সময় তারা দুজন অন্যমনস্ক ও কানে ইয়ারফোন থাকায় ট্রেন আসার শব্দটি শুনতে পায়নি।
তাদের লাশ নরসিংদী সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে। তাদের পরিবারের সদস্যদের খবর জানানো হয়েছে। তারা এলে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এর আগে বুধবার সকাল ৯টার দিকে পলাশের জিনারদী রেলওয়ে স্টেশনের আউটারে হেঁটে রেললাইন পার হওয়ার সময় মহানগর এক্সপ্রেসের নিচে কাটা পড়ে সোহাগ মিয়া (২৭) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। ওই দুর্ঘটনায় তার মাথা থেঁতলে যায় ও পা কেটে যায়। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
মতামত দিন