এমন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতির শিকার গ্রামবাসীদের অভিযোগ, তারা পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পাচ্ছে না
জামালপুর জেলায় যমুনা নদীর পানি কিছুটা হ্রাস পেলেও বন্যা পরিস্থিতি এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে নদীর পানি চার সেন্টিমিটার কমে গিয়েও, এখন বিপদসীমার ৫৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত থাকায় দুর্ভোগে পড়েছেন জেলার প্রায় দেড় লাখ মানুষ।
এমন দুযোর্গপূর্ণ পরিস্থিতির শিকার গ্রামবাসীদের অভিযোগ তারা পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পাচ্ছেনা। শনিবার (৪ সেপ্টেম্বর), ইসলামপুর উপজেলার চুনাডুলী ইউনিয়নের আশ্রিতদের মাঝে এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করতে দেখা যায়।
"প্রায় ৬ দিন থেহে (থেকে) পানি মদ্যে বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে খুবই কষ্টে আছি, হাঁস-মুরগিসব বন্যায় ভেসে গেছে। এহন পর্যন্ত কোন মেম্বার চেয়ারম্যান খোঁজখবর নেই নাই। এক বেলা খেয়ে দুই বেলা না খেয়ে থাকতে হয় আমাগরে।" - কথাগুলো ঠিক এভাবেই বলছিলেন বন্যায় কবলিত খামারীপাড়া এলাকার আশ্রিত বিধবা রমিছে বেওয়া।
এছাড়াও আরও অনেকেই এ একই অভিযোগ করে জানান, ত্রাণের জন্য চিনাডুলীর চেয়ারম্যানের কাছে গেলে তিনি বলেন তোমরা তো বেলগাছার ভোটার আর বেলগাছার চেয়ারম্যানের কাছে গেলে বলে তোমরা তো চিনাডুলির বাসিন্দা ত্রাণ সামগ্রী ওই চেয়ারম্যানই দেবে। এমনকি অনেকেই জানান বন্যার সময় তারা কোনোপ্রকারের সাহায্ ই পাননি। কোনোরকম চিড়া-মুড়ি খেয়েই বেঁচে আছেন তারা।
তবে বিষয়টি অস্বীকার করে বেলগাছা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মালেক। তিনি বলেন, "বন্যার সময় কেউ যাতে না খেয়ে থাকে। সবার কাছে আমার ফোন নাম্বার দেওয়া আছে। ফোন করলেই তাদের ঘরে খাবার পৌঁছে যাবে।"
এমনকি প্রতিনিয়তই বন্যার্ত এলাকায় খোঁজখবর রাখছেন বলেও দাবি করেন এ ইউপি চেয়ারম্যান।
পর্যাপ্ত খাবার মজুদ রয়েছে জানিয়ে জেলা ত্রাণ ও পুর্নবাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, জেলার বন্যার্ত এলাকায় ৯০ মেক্ট্রিক টন চাল, ১২ লাখ ৫০ হাজার নগদ টাকা ও ১ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
কিন্তু, শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার বন্যার্ত এলাকায় পরিদর্শন করে দেখা গেছে, বন্যায় উপজেলার বেলগাছা, কুলকান্দ, চিনাডুলী, সাবধরী, নোয়ারপাড়া ও পলবান্ধা ইউনিয়নের পানিবন্দী রয়েছে অন্তত আশি হাজার মানুষ। এছাড়াও দুর্গত এলাকায় শুকনো খাবার, শিশু ও গো-খাদ্যের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। কিন্তু, উপজেলা প্রশাসন বলছেন, বন্যায় দুর্ঘটনাকবলিত হয়েছে ২১ হাজার ৫০০ জন মানুষ।
মতামত দিন