‘ঘর নেওয়ার জন্য আমার কোনো টাকা লাগেনি। ঘরটি নির্মাণের পরে আমার পছন্দ না হওয়ায় আমি ভেঙে ফেলেছি’
মুজিববর্ষ উপলক্ষে গৃহহীন ও ভূমিহীনদের প্রধানমন্ত্রীর উপহারের দেওয়া ঘর পছন্দ না হওয়ায় ঘরটি ভেঙে ফেলেছেন ওবাইদুল বিশ্বাস নামে এক ব্যক্তি। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া উপজেলার হিরণ ইউনিয়নের বর্ষাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
বর্ষাপাড়া গ্রামের মৃত রাঙ্গা মিয়া বিশ্বাসের ছেলে ওবাইদুল বিশ্বাস পেয়েছেন মুজিববর্ষের একটি ঘর। যদিও তার পরিবার পরিজন নিয়ে বসবাস করার মতো বড় একটি টিন-কাঠের ঘর রয়েছে। তবে ঘরটি তার পছন্দ না হওয়ায় সম্প্রতি তিনি সেটি ভেঙ্গে ফেলেছেন। আর্থিক ভাবেও সচ্ছল ওবাইদুল বিশ্বাস। আর তাইতো এই ব্যক্তি কীভাবে মুজিববর্ষের উপহারের ঘর পেল এমন প্রশ্ন এখন এলাকাবাসীর ।
জানতে চাওয়া হলে স্থানীয় ইউপি সদস্য লায়েকুজ্জামান বলেন, “ওবাইদুল বিশ্বাস আমাদের এলাকায় একজন সচ্ছল ব্যক্তি। তিনি কোনোভাবেই মুজিববর্ষের ঘর পেতে পারেন না। তার চেয়ে অনেক দরিদ্র ব্যক্তি আমাদের এলাকায় রয়েছে। তাদের না দিয়ে ওবাইদুল বিশ্বাসকে ঘর দেওয়াটা কোনোভাবেই উচিত হয়নি। তবে আমি শুনেছি স্থানীয় এক আওয়ামী লীগ নেতাকে ৫০ হাজার টাকা দিয়ে এই ঘরটি নিয়েছেন তিনি। ঘর নির্মাণের পরে তার পছন্দ না হওয়ায় তিনি ঘরটি ভেঙ্গে ফেলেছেন ।”
তবে টাকা দিয়ে ঘর পাওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে ওবাইদুল বিশ্বাস বলেন, “হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি কামরুল বিশ্বাস আমাকে ভালোবেসে এই ঘরটি দিয়েছেন। এই ঘর নেওয়ার জন্য আমার কোনো টাকা লাগেনি। ঘরটি নির্মাণের পরে আমার পছন্দ না হওয়ায় আমি ভেঙে ফেলেছি।”
এদিকে ওবাইদুল বিশ্বাসের স্ত্রী লাইলী বেগম ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ঘর পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, “আমার স্বামী ৫০ হাজার টাকা দিয়ে ঘরটি এনেছেন। তবে কাকে টাকা দিয়েছেন তা আমার জানা নেই। ”
হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি কামরুল বিশ্বাস বলেন, “এই ঘরটি আমি দেইনি। ঘরটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান খান দিয়েছেন।”
সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান খান বলেন, “হিরণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৬নং ওয়ার্ডের সভাপতি কামরুল বিশ্বাসের সুপারিশে আমরা মুজিববর্ষের ঘর পাওয়ার জন্য ওবাইদুল বিশ্বাসের নামটি নির্বাচন করেছিলাম।”
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌস ওয়াহিদ বলেন, “যেহেতু মুবিবর্ষের ঘরগুলো সরকারি অর্থায়ণে নির্মাণ করা হয়েছে। তাই এই ঘরগুলো ইচ্ছা হলেই ভেঙ্গে ফেলা যায় না। বিষয়টি আমি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।”
উল্লেখ্য, প্রকল্পের শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রীর উপহার দেওয়া এসব ঘরের নির্মাণ, বিতরণ নিয়ে নানা অভিযোগ উঠে।
মতামত দিন