সাধারণ ফিচার ফোনে অসাধারণ ফ্রেমিং আর কম্পোজিশনের কারণে ‘‘একজন সুখী ফটোগ্রাফার’’ অ্যাখ্যা পাওয়া রিকশাচালক অনেকের প্রশংসায় সিক্ত হন
কিছুদিন আগেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে একটি ভিডিব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়। যাতে দেখা যায়, একজন রিকশাচালক জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে তার ফিচার ফোনে ছবি তুলছেন। ওয়ালটন ব্র্যান্ডের ফিচার ফোনে রিকশাচালক মোহাম্মদ সুরুজ ওরফে সোহেলের শখের ফটোগ্রাফি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ২ মিনিট ৭ সেকেন্ডের ভিডিওটি সাধারণ মানুষের পাশাপাশি নজরে আসে ওয়ায়ালটনেরও। আর তাই নিজেদের প্রতিষ্ঠানের ওই ফিচার ফোনটির গ্রাহক সুরুজকে বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) ওয়ালটনের পক্ষ থেকে পুরস্কার হিসেবে সম্প্রতি বাজারে আসা ওয়ালটনের ফ্ল্যাগশিপ ফোন ‘‘প্রিমো জেডএক্সফোর’’সহ দেওয়া হয়েছে নগদ অর্থও।
এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ওয়ালটন জানায়, পরিবার নিয়ে মোহাম্মদ সুরুজ ঢাকার কামরাঙ্গীরচরে থাকেন। রিকশা চালিয়ে করা আয়েই চলে তার ৮ সদস্যের সংসার। ঘরে বৃদ্ধা মা, স্ত্রী এবং ২ ছেলে ও ৩ মেয়ে। বর্ণিল ঢাকা শহরের বিভিন্ন দৃশ্যের ছবি তুলতে ভালোবাসেন তিনি। সেসব ছবি সন্তানদের দেখান। সন্তানদের মুগ্ধতা ছুঁয়ে যায় তাকেও। শত অভাবের মাঝেও তার মুখের হাসি ফুরায় না। সংসদ ভবনের ছবি তোলার সময় সুরুজের ভিডিওটি ধারণ করে ফেসবুকে আপলোড করেন ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটিতে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগেরর ৩য় বর্ষে অধ্যয়নরত শিক্ষার্থী মাজহারুল হক মুহাজির। ভিডিওটি ফেসবুকে আপলোড হতেই তা ছড়িয়ে পড়ে অসংখ্য প্রোফাইলে। ওয়ালটন ফিচার ফোনের ডিজিটাল ক্যামেরায় তোলা ছবিগুলোর ফ্রেমিংয়ে মুগ্ধ নেটিজেনরা। অনেকেই সুরুজের কম্পোজিশনের প্রশংসা করছেন। অনেকেই তাকে ‘‘একজন সুখী ফটোগ্রাফার’ হিসেবেও আখ্যায়িত করেছেন। একটি স্মার্টফোন পেলে তার ফটোগ্রাফির শখ যে আরও পূর্ণতা পাবে, সেটাও উল্লেখ করেন অনেকেই।
পরবর্তীতে ভাইরাল হওয়া ভিডিওটি নজরে এড়ায়নি ওয়ালটন ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মুর্শেদেরও। ব্র্যান্ড ম্যানেজার জীবন আহমেদকে তিনি ওয়ালটন ফোনের ওই গ্রাহককে খুঁজে বের করে পুরস্কৃত করার দায়িত্ব দেন। ওয়ালটনের আরেক কর্মকর্তা বিধান হালদারের মাধ্যমে ভিডিও আপলোডকারীর কাছেই ভাইরাল রিকশাচালকের খোঁজ পায় ওয়ালটন। বুধবার রাজধানীর বসুন্ধরায় ওয়ালটন করপোরেট অফিসে তাকে আমন্ত্রণ জানিয়ে তার হাতে বিশেষ উপহার তুলে দেন ওয়ালটনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম মুর্শেদ।
পুরস্কার প্রাপ্তির অনুভূতি জানিয়ে মোহাম্মদ সুরুজ জানান, ১৮ বছর ধরে তিনি ঢাকায় রিকশা চালাচ্ছেন। নিজের ছবি তোলার শখ পূরণে একটি ফিচার ফোনও কিনতে না পারায় তার সম্বল ছিলো বোনের দেওয়া ফোনটিই। ওয়ালটনের এমডি তাকে কোম্পানির সবচেয়ে দামি স্মার্টফোনটি উপহার দিয়েছেন। এই ফোনটি তার এবং সন্তানদের অনেক দিনের স্বপ্ন পূরণ করলো। তাছাড়া, ওয়ালটনের এমডির দেওয়া নগদ অর্থ তার পরিবারকে সহায়তা করবে বলেও জানান তিনি।
ওয়ালটন হাই-টেকের এমডি গোলাম মুর্শেদ বলেন, "মোহাম্মদ সুরুজ ওয়ালটনের একজন সম্মানিত গ্রাহক। তার ফটোগ্রাফির শখ পূরণের উপলক্ষ্য হতে পেরে আমরা আনন্দিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তাকে যারা সবার কাছে তুলে ধরেছেন, আমি তাদের ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানাচ্ছি। মোহাম্মদ সুরুজের মতো মানুষেরা আছেন বলেই ওয়ালটন আজ সবার পছন্দের ব্র্যান্ড হতে পেরেছে।"
মোহাম্মদ সুরুজের পুরস্কার প্রাপ্তির অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ওয়ালটনের চিফ মার্কেটিং অফিসার ফিরোজ আলম, এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর আদনান আফজাল, ডেপুটি অপারেটিভ ডিরেক্টর মাহবুব-উল হাসান, ভিডিও আপলোডকারী মাজহারুল হক মুহাজির প্রমুখ।
মতামত দিন