অসুস্থ ও পোকামাকড়ের কামড়ে আক্রান্ত ক্ষত-বিক্ষত শিশুটিকে মাতৃস্নেহে আগলে দেবীদ্বার থানা পুলিশকে খবর দেন সিঙ্গাপুর প্রবাসীর স্ত্রী
কুমিল্লার দেবীদ্বারে ফসলী ক্ষেতের পাশের নালা থেকে একটি নবজাতককে (ছেলে) উদ্ধার করা হয়েছে। নবজাতকটিকে কে বা কারা সেখানে ফেলে গেছে তা জানা যায়নি। খবর পেয়ে শিশুটিকে দত্তক নিতে আগ্রহী হয়েছেন এক নারী।
বুধবার (১ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার মোহনপুর ইউনিয়নের ভৈষেরকোট গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির পাশে একটি ফসলী ক্ষেত থেকে নবজাতককে উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানা যায়, ভৈষেরকোট গ্রামের ভূঁইয়া বাড়ির পাশে একটি ফসলী ক্ষেতের পানি নিষ্কাশনের নালা থেকে এক শিশুর কান্না শুনে থমকে দাঁড়ান পথচারীরা। ধীরে ধীরে ভিড় জমায় শত শত উৎসুক জনতা। দীর্ঘক্ষণেও কেউ উদ্ধারে এগিয়ে না এলে অবশেষে শিশুটিকে কোলে তুলে নেন ভৈষেরকোট গ্রামের সিঙ্গাপুর প্রবাসী তাজুল ইসলামের স্ত্রী গৃহবধূ সালমা আক্তার। অসুস্থ ও পোকামাকড়ের কামড়ে আক্রান্ত ক্ষত-বিক্ষত শিশুটিকে মাতৃস্নেহে আগলে দেবীদ্বার থানা পুলিশকে খবর দেন তিনি।
দেবীদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আরিফুর রহমান খবর পেয়ে কয়েকজন পুলিশ ও ইউপি সদস্যদের সহায়তায় শিশুটিকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান।
উদ্ধার শিশুটিকে দত্তক পাওয়ার আশায় শুরু থেকেই ভৈষেরকোট বিরাম বাড়ির মাহবুব সরকারের স্ত্রী গৃহবধূ ডলি আক্তার শিশুটির দেখাশোনা করে যাচ্ছেন। তার এক কন্যা ও তিন পুত্র সন্তান রয়েছে। তার তিনটি পুত্র সন্তানই প্রতিবন্ধী। তাই সেই শিশুটিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এসে দেখভাল করছেন। শিশুটির বস্ত্র ও দুধের ব্যবস্থাও করেন তিনি।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ আহমেদ কবির বলেন, “দত্তক নিতে হলে অনেক আইনি জটিলতাও রয়েছে, যা সমাজসেবা অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, পুলিশ প্রশাসনসহ বিভিন্ন দপ্তরের সম্মতি থাকতে হবে। দত্তক নিতে আগ্রহীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে যাচাই বাছাইয়ের মাধ্যমে তা হস্তান্তরের ব্যবস্থা নিতে হবে। তার আগে অপেক্ষা করতে হবে শিশুটির বৈধ অভিভাবক কেউ আছে কিনা।”
দেবীদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আরিফুর রহমান বলেন, “উদ্ধারকৃত নবজাতক শিশুটিকে দেবীদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। সকালে খবর পেয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে স্থানীয়দের সহায়তায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে দিই। শিশুটির আসল পরিচয় খুঁজে বের করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। শিশুটির বৈধ অভিভাবকের সন্ধান পেতে স্থানীয়দের সহযোগিতা কামনা করছি। তবে আমরাও তার পরিচয় জানার চেষ্টা করছি।”
মতামত দিন