বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধুর খুনী মোশতাক, রশীদ বা ফারুকরা স্বীকার করেছে যে জিয়াউর রহমান সব সময় তাদের সঙ্গে ছিল এবং জিয়াই ছিল তাদের সকল ক্ষমতার উৎস
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, জিয়াউর রহমান সেক্টর কমান্ডার ছিল হওয়া স্বত্বেও পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে তার কখনও গুলি চালানোর কোনও নজির নেই। তিনি জানান, সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফ আহত হওয়ার পর মেজর জিয়া দায়িত্ব পান।
রাজধানীর কৃষিবিদ ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে মঙ্গলবার (৩১ আগস্ট) ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে সরকার প্রধান এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে জিয়াউর রহমানের অবদান নিয়ে তিনি বলেন, "সেক্টর কমান্ডার হওয়ার পরেও পাকিস্তান সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জিয়াউর রহমানের গুলি চালোনোর কোনো নজির নেই। কেউ এটা প্রমাণ করতে পারবে না।"
তিনি বলেন, “বিবিসিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বঙ্গবন্ধুর খুনী মোশতাক, রশীদ বা ফারুকরা স্বীকার করেছে যে জিয়াউর রহমান সব সময় তাদের সঙ্গে ছিল এবং সেই ছিল সকল ক্ষমতার উৎস।"
জাতির পিতার দেপুনর্গঠনের প্রচেষ্টার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, "যখন পরাজিত শক্তি দেখলো বাংলাদেশকে তাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি থেকে থামানো যাবে না তখন তারা ১৫ আগস্ট গণহত্যা চালিয়েছিল। এ ব্যাপারটা মনে রেখে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।"
১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ডের পর পরাজিত বাহিনী বাংলাদেশের মুক্তি ও স্বাধীনতার সংগ্রামের ইতিহাস বিকৃত করে বলেও জানান প্রধানমন্ত্রী।
স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি এখনো বৈদেশিক সাহায্য নিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে বলে সকলকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, "যুদ্ধাপরাধী, পরাজিত শক্তি এবং ১৫ আগস্টের খুনিরা এবং তাদের বংশধরেরা এখনও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় যে সকল আন্তর্জাতিক শক্তি আমাদের বিরোধিতা করেছিল তাদের সহায়তায় চক্রান্ত চালাচ্ছে। কাজেই এই ব্যাপারে জাতিকে পদে পদে সতর্ক থাকতে হবে।"
দেশের উন্নতির পথেও অপশক্তিদের বাধার কথা উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, "আমাদের অগ্রযাত্রার পথ মসৃণ নয়, বরং তা নানা প্রতিবন্ধকতায় ভর্তি। কিন্তু সব বাধা আর প্রতিকূলতা অতিক্রম করে আমাদের সামনে এগিয়ে যেতে হবে এবং আমরা তা করে যাচ্ছি।" এছাড়া, গত ১২ বছর ধরে বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশ স্বহিমায় মাথা উঁচু করে আছে বলেও জানান তিনি।
প্রধানমন্ত্রী জানান, তার মাঝে মাঝে মনে হয় যারা ব্যক্তিগত বিষয়সহ বিভিন্ন কাজে সবসময় বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে যেতেন, তারা কিভাবে তাকে হত্যা করতে পারলো।
প্রধানমন্ত্রী তার মা বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের আত্মত্যাগের কথা তুলে ধরে জানান, তার মা সারা জীবন বঙ্গবন্ধুর পাশে ছিলেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমার বাবা পুরোপুরি দেশের সেবায় নিজেকে নিয়োজিত করতে পেরেছিলেন কারণ তিনি তার পাশে এমন একজন জীবনসঙ্গী পেয়েছিলেন, যা এটি একটি বিরল দৃষ্টান্ত।"
ছাত্রলীগের প্রধান পৃষ্ঠপোষক শেখ হাসিনা তার কর্মী ও নেতাদের দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে এবং বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করতে আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক ও আবদুর রহমান, ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয় এবং সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে ১৫ আগস্ট হত্যাকাণ্ডের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী এর আগে “মাতৃভূমি” এবং “জয় বাংলা ম্যাগাজিন” শীর্ষক বইয়ের প্রচ্ছদ উন্মোচন করেন।
মতামত দিন