১৯৭৪ সালে রেলের জমিতে এই মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। লিজ ছাড়াই সরকারি জমিতে চলে আসছে এর কার্যক্রম
বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহার রেলওয়ে স্টেশনের পাশে অবস্থিত জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসার তালা প্রায় ২২ ঘণ্টা পর খুলে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৩০ আগস্ট) দুপুরে তালা খুলে দেওয়ার সময় মাদ্রাসার শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ এলাকাবাসী উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, রেলের জমিতে ভবন নির্মাণের অভিযোগে গতকাল রবিবার (২৯ আগস্ট) বিকালে রেলওয়ে পশ্চিমাঞ্চল পাকশী বিভাগের ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুরুজ্জামান মাদ্রাসা সিলগালা করে দেন।
পরে বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এ নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় জনসাধারণের মনে।
স্থানীয়রা জানান, জনগণের সহযোগিতায় ১৯৭৪ সালে সান্তাহারে রেলের জমিতে জামিয়া আরাবিয়া দারুল উলুম মাদ্রাসা ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়। দিন দিন মাদ্রাসার সম্প্রসারণসহ বাড়তে থাকে শিক্ষার্থী৷ বর্তমানে প্রায় ৬০০ শিক্ষার্থী মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত।
তারা জানায়, মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জায়গাটি লিজ নেওয়ার জন্য রেল বিভাগের কাছে কয়েকবার আবেদন করলেও জায়গাটি মাদ্রাসাকে লিজ দেওয়া হয়নি। এ অবস্থায় গতকাল বিকালে হঠাৎ করে অভিযান চালিয়ে মাদ্রাসা সিলগালা করে দেয় রেল কর্তৃপক্ষ।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সোমবার সকালে মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক আহমেদ আলী সরদার স্বপনসহ কমিটির অন্যান্য সদস্য এবং সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করেন সান্তাহার পৌর মেয়র তোফাজ্জল হোসেন ভুট্টু, বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আশরাফুল ইসলাম মন্টু, আদমদীঘি উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম চম্পা, সান্তাহার পৌর কাউন্সিলর আবদুল কুদ্দুসসহ প্রমুখ ব্যক্তিরা।
বৈঠকে রেলের পশ্চিমাঞ্চল পাকশী বিভাগের ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুরুজ্জামানের সঙ্গে ভার্চুয়ালি কথা বলেন তারা।
আলোচনার এক পর্যায়ে তিনি মাদ্রাসার তালা খুলে দিতে সম্মত হন। পরে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে রেলের ভূ-সম্পত্তি বিভাগের লোকজন এসে মূল ফটকের তালা খুলে দেয়।
মাদ্রাসার মুহতামিম (অধ্যক্ষ) মাওলানা মাহাবুবুল ইসলাম জানান, মাদ্রাসার পাশে পুকুর ও বেশ কয়েকটি দোকান রয়েছে। সেগুলো লিজ নিয়ে নিয়মিত খাজনা দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে। কিন্তু মাদ্রাসার জায়গাটি লিজ নেওয়ার জন্য দীর্ঘদিন ধরে আবেদন করলেও লিজ দেওয়া হয়নি।
তিনি আরও জানান, সর্বশেষ দু’বছর আগে রেল মন্ত্রণালয়ে এ বিষয়ে আবেদন করা হয়েছিল। রেলমন্ত্রী, সচিবসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আবেদনটি গ্রহণ করলেও এখন পর্যন্ত অনুমোদন করা হয়নি।
এ ব্যাপারে রেলের পশ্চিমাঞ্চল পাকশী বিভাগের ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. নুরুজ্জামানের সঙ্গে ফোনে কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মতামত দিন