পদ্মা সেতুর প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত নিরাপত্তাকর্মী ও কয়েকজন শ্রমিক জুলহাস হাওলাদারের উপর চুরির অভিযোগ এনে, রড দিয়ে মারধর করে
মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ের মাওয়া এলাকায় জুলহাস হাওলাদার (৩৫) নামে এক যুবককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে পদ্মাসেতু প্রকল্পের নিরাপত্তা কর্মী ও শ্রমিকসহ ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নিহত জুলহাস হাওলাদার উপজেলার কুমারভোগ পুনর্বাসন এলাকার মৃত হাসান হাওলাদারের ছেলে। তিনি পেশায় অটোচালক ছিলেন।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) ভোরে মাওয়া চৌরাস্তা এলাকা সংলগ্ন পদ্মা সেতুর প্রকল্প এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
অন্যদিকে গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- পদ্মাসেতুর প্রকল্পের নিরাপত্তাকর্মী সেলিম, রাব্বি, তপু, আল-আমিন, আরিফ হোসেন, আব্দুল মান্নান, ইসরাফিল, রুবেল ও সুশান্ত।
লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগির হোসাইন ঢাকা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, এ ঘটনায় শুক্রবার সন্ধ্যায় লৌহজং থানায় নিহতের বড় ভাই আকবর হাওলাদার বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে জানা যায়, শুক্রবার ভোরে অটোরিকশা নিয়ে মুন্সিগঞ্জে মাওয়া চৌরাস্তা এলাকায় যায় জুলহাস হাওলাদার। সেখানে পদ্মা সেতুর প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত নিরাপত্তাকর্মী ও কয়েকজন শ্রমিক জুলহাস হাওলাদারের উপর চুরির অভিযোগ এনে, রড দিয়ে মারধর করে। এ সময় জুলহাসের চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এসে তাকে উদ্ধার করে।
নিহতের স্বজনেরা জানায়, খবর পেয়ে তারা গুরুতর আহত অবস্থায় জুলহাসকে উদ্ধার করে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। তাদের দাবি, পরিকল্পিতভাবে জুলহাসকে হত্যা করা হয়েছে।
মামলার বাদী ও নিহতের বড় ভাই আকবর হাওলাদার জানান, জুলহাস প্রতিদিনের মতই ভোরবেলায় অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। বাড়ির কাছেই পদ্মাসেতু হওয়ায় অধিকাংশ সময় সেতুর আশেপাশের এলাকাতেই অটোরিকশা চালাতো সে। কিন্তু সকালে খবর আসলো আমার ভাইকে রড চুরির অপরাধে আটক করা হয়েছে। যেয়ে দেখি সে মাটিতে পড়ে আছে।
তিনি আরও জানান, আমার ভাইকে চোর অপবাদ দিয়ে মেরে ফেলল। কিন্তু আমার ভাই চোর না। এটা পরিকল্পিত হত্যা।
এ বিষয়ে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. রেজাউল হক জানান, সকাল ৯ টার দিকে মৃত অবস্থায় ওই ব্যক্তিকে হাসপাতালে আনা হয়। বিষয়টি পুলিশকে জানানো হলে পুলিশ এসে লাশ উদ্ধার করে নিয়ে যায়।
লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগির হোসাইন জানান, লাশ ময়নাতদন্তের জন্য মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। মামলার পর পদ্মাসেতু প্রকল্পের নিরাপত্তাকর্মী ও শ্রমিকসহ ১০জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এ বিষয়ে তদন্ত চলছে।
মতামত দিন