চিঠি প্রেরণকারী নিজেকে জঙ্গি সংগঠনের সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছে
টাঙ্গাইলের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিনকে চিঠি দিয়ে বোমা মেরে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে। চিঠি প্রেরণকারী নিজেকে জঙ্গি সংগঠনের সদস্য বলে পরিচয় দিয়েছে। এ নিয়ে বিচারকদের মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (২৭ আগস্ট) দুপুরে বিচারক খালেদা ইয়াসমিন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। নিরাপত্তাহীনতার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন বিচারক খালেদা ইয়াসমিনসহ তার পরিবারের লোকজন।
আদালত সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার একটি খামে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক খালেদা ইয়াসমিনের কাছে একটি চিঠি আসে। সেখানে প্রেরকের স্থানে জুবায়ের রহমান লেখা রয়েছে।
বিচারক খালেদা ইয়াসমিন বলেন, “চিঠিটি পাওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বিষয়টি জানানো হয়েছে।”
ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, “আমি জঙ্গি সংগঠনের লোক। তাই জীবনে চলার পথে অনেক অন্যায় কাজ করেছি, এমনকি এখনোও করছি। আমরা যখন যাকে টার্গেট করি তখন তাকে ছলে বলে কৌশলে হত্যা করি। এটাই আমাদের পেশা। এবার আপনাকে হত্যা করার পালা। কারণ আপনি নারী ও শিশু কোর্টে আসার পর থেকে এখন পর্যন্ত অনেক বড় ধরনের মামলার রায় দিয়েছেন। তাতে আমাদের লোকজনের বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে। তাই আল্লাহ দোহাই দিয়ে বলছি যদি নিজের জীবনের প্রতি মায়া থাকে তাহলে টাঙ্গাইল থেকে বদলি হয়ে চলে যান। যদি কথা না শুনেন আপনাকে হত্যা করতে বাধ্য হবো। আর আমাদেরকে যারা সহযোগিতা করছেন তারা কয়েকজন আইনজীবী, এমনকি জজ কোর্ট ও ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট এর স্টাফদের সমন্বয়ে।
ওই বিচারককে হত্যার দুটি নমুনা দেওয়া হয়েছে, “অফিস থেকে বাসা আসা যাওয়ার পথে আপনার গাড়িতে বোমা নিক্ষেপ করা হবে। অফিস চলাকালীন লোকজনের ভিড়ের মধ্যে গিয়ে আপনার এজলাসে বা খাসকামরা এর মধ্যে বোমা নিক্ষেপ করা হবে।”
চিঠিতে আরও বলা হয়, “পুলিশ আপনাকে যতই নিরাপত্তার মধ্যে রাখুক না কেনো আপনাকে আমাদের বোমার হাত থেকে রক্ষা করতে পারবে না। তাই প্রাণ বাঁচাতে চাইলে টাঙ্গাইল থেকে তাড়াতাড়ি বদলি হয়ে চলে যান।”
র্যাব-১২ সিপিসি ৩ এর কোম্পানি কমান্ডার কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, র্যাবের সকল টিম বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে।
এ ব্যাপারে পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, “বিচারক খালেদা ইয়াসমিন আমাদেরকে বিষয়টি জানিয়েছেন। বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। বিচারক খালেদা ইয়াসমিন ও তার পরিবারের লোকজনদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ ছাড়া তার বাসায় আসা যাওয়ার পথে এবং আদালতে নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।”
মতামত দিন