পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজের পাশাপাশি ভয়াবহ সব সন্ত্রাসের মোকাবিলা করতে হয়
বিসিএস পুলিশ ক্যাডারে অপেক্ষাকৃত লম্বা গড়নের অফিসার নিয়োগ করতে চায় পুলিশ হেডকোয়ার্টার। এজন্য বাহিনীতে ভর্তিচ্ছু অফিসারদের জন্য সুনির্দিষ্ট উচ্চতার পরিমাপ প্রস্তাব করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে।
সম্প্রতি ইংরেজি দৈনিক দ্য ডেইলি স্টারের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
পুলিশে নিয়োগের জন্য পুরুষ প্রার্থীদের ক্ষেত্রে বর্তমানে নির্ধারিত কাঙ্ক্ষিত উচ্চতা ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি এবং নারীদের জন্য ৫ ফুট। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো প্রস্তাবনায় যা পরিবর্তনের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে। পুলিশ তাদের অফিসার ক্যাডেটদের ক্ষেত্রে কমপক্ষে ৫ ফুট ৬ ইঞ্চি উচ্চতার পুরুষ প্রার্থী এবং ৫ ফুট ৪ ইঞ্চি উচ্চতার নারী প্রার্থী নিয়োগের প্রস্তাব করেছে।
প্রস্তাবনায় বলা হয়েছে, “পেশাদারিত্বের ক্ষেত্রে মানুষের সেবার জন্য মেধা, প্রখরতা এবং সাহসের পাশাপাশি নিয়োগপ্রাপ্ত অফিসারদের ভালো শারীরিক গঠন এবং সামর্থ্য থাকা প্রয়োজন।”
পাশাপাশি আবেদনকারীদের অবিবাহিত হতে বলেও প্রস্তাবনায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এছাড়া, বিশেষ বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের মেডিকেল পরীক্ষা রাজধানীর সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতালে করার জন্যও সরকারের অনুমতি চেয়েছে বাহিনীটি।
পুলিশ সদর দপ্তরের কর্মকর্তারা বলেন, পুলিশ সদস্যদের বিভিন্ন প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজের পাশাপাশি ভয়াবহ সব সন্ত্রাসের মোকাবিলা করতে হয়। তাই অফিসারদের শারীরিকভাবে আরও সামর্থ্যবান হওয়া প্রয়োজন।
বর্তমানে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীন সরকারি হাসপাতালগুলোতে পুলিশসহ অন্যান্য বিসিএস ক্যাডারে নিয়োগপ্রাপ্তদের শারীরিক পরীক্ষা করা হয়।
পুলিশ তাদের প্রস্তাবনায় বলেছে, “যেহেতু পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সাধারণ বিসিএসের মাধ্যমে সব কর্মকর্তাদের নিয়োগ করা হয়, সেহেতু সবসময় শারীরিকভাবে সুস্থ, মেধাবী, সাহসী এবং প্রতিযোগী মনোভাবাপন্ন ক্যাডারদের পুলিশে নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয় না।”
পুলিশ সদর দপ্তরের এক কর্মকর্তা বলেন, কিছু অফিসার আছেন যারা মারাত্মক রোগে আক্রান্ত হওয়া সত্ত্বেও পুলিশে নিয়োগ পেয়েছেন। তাই যোগদানের কয়েক বছর পর তারা শারীরিক সক্ষমতা হারিয়ে দায়িত্ব পালনে অক্ষম হয়ে পড়েন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই কর্মকর্তা বলেন, “তাই পুলিশ চায় বিশেষ বিসিএসের মাধ্যমে নিয়োগ দিয়ে সেন্ট্রাল পুলিশ হাসপাতালে মেডিকেল পরীক্ষা করতে। এই হাসপাতালের সব ধরনের সক্ষমতা রয়েছে।”
এএসপি হিসেবে তারা কেন বিবাহিতদের নিয়োগ দিতে চান না, এমন প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা বলেন, “নিয়োগের পর একজন এএসপিকে দীর্ঘ এক বছরের ট্রেনিংয়ে যেতে হয়। যেখানে তার সম্পূর্ণ মনোযোগ প্রয়োজন। কিন্তু যারা বিবাহিত এবং সন্তান রয়েছে তারা পুরোপুরি মনোযোগী হতে পারেন না।”
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের উপ-সচিব (পুলিশ-১) জানান, তারা প্রস্তাবনাটি পেয়েছেন এবং এ নিয়ে কাজ চলছে।
তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত পাবলিক সার্ভিস কমিশনের কাছ থেকেই আসবে বলে জানান তিনি।
মতামত দিন