কক্সবাজারে বেড়াতে আসা এক দম্পতি বলেন, সৈকতে এসেও যদি মাস্ক পড়তে হয় তাহলে ভ্রমন করার কি দরকার
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর বৃহস্পতিবার খুলেছে দেশের বিনোদন ও পর্যটন কেন্দ্রগুলো। ফলে ভ্রমণপ্রেমীরা ভিড় জমাতে শুরু করেছেন এসব জায়গায়। তবে পর্যটকেরা কেউই মানছেন না কোনো স্বাস্থ্যবিধি। কারও মুখেই মাস্ক যেমন ছিল না তেমন ছিল না সামাজিক দূরত্ব মেনে চলার আগ্রহ। কিছু কিছু পর্যটক মাস্ক পড়লেও সমুদ্রে নামার সময় সেগুলো খুলে জুতার ভিতর রেখে দিয়েছেন।
শুক্রবার (২০ আগস্ট) ছুটির দিনে কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত ঘুরে দেখা যায়, করোনাভাইরাসের ভীতি উপেক্ষা করে সৈকতের নোনা জলে গা ভাসাচ্ছেন অধিকাংশ পর্যটক।
তবে জেলা প্রশাসন বলছে, স্বাস্থ্যবিধির বিষয়ে তারা খুব সতর্ক আছে। পর্যটকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে এক ঘরে বন্দি থেকে এবং শহরে যান্ত্রিক জীবন থেকে মুক্তি পেতে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ায় ছুটে এসেছেন কক্সবাজারে।
সৈকতে জুতা খুলে রেখে জুতার উপর মুখের উপর ব্যবহৃত মাস্ক ঢুকিয়ে রেখে গোসল করতে নামেন রিতা সরকার নামের এক পর্যটক। তিনি বলেন, “প্রশাসনের ভয়ে ১০ টাকা দিয়ে মাস্ক কিনে এনেছিলাম। কিন্তু, সৈকতে কেউ মাস্ক ব্যবহার না করায় এবং প্রশাসনের পক্ষ থেকেও কোনো কড়াকড়ি না করায় আর মাস্ক ব্যবহার করছি না।”
শামীম রেজা নামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী বলেন, “সৈকতে কোনো ধরণের স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। এতে করে করোনাভাইরাস সংক্রামণ বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।”
তৌহিদ ও মীম নামে এক দম্পতি বলেন, “দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ। তাই, সন্তানদের নিয়ে কক্সবাজার সৈকতে আসা। কিন্তু, মুখে মাস্ক পড়তে পড়তে বাচ্চারা ক্লান্ত হয়ে পড়েছে। তাই খুলে রেখেছি। সৈকতে এসেও যদি মাস্ক পড়তে হয় তাহলে ভ্রমণ করার কি দরকার?”
এদিকে কক্সবাজারের পর্যটন খুলে দেওয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা খুশি হলেও সরকারের বেধে দেয়া শর্ত মানছেন না কেউই। অধিকাংশ হোটেল-মোটেল শতকরা ৫০% রুম বুকিংয়ের ব্যাপারে অখুশি। ফলে ইচ্ছে মতো রুম বুকিং দিচ্ছেন তারা।
কক্সবাজার হোটেল মোটেল ও রিসোর্ট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আবুল কাসেম বলেন, “সরকারের দেওয়া সব শর্ত মানা হচ্ছে। সৈকতে যেয়ে পর্যটকরা স্বাস্থ্যবিধি মানছে কি-না সেই দায়িত্ব আমাদের নয়। কক্সবাজারে পর্যটন জোনে যেসমস্ত হোটেল মোটেল রয়েছে সবকটি স্বাস্থ্যবিধি মেনে পর্যটকদের রুম বুকিং দিচ্ছে।”
টুরিস্ট পুলিশের কক্সবাজার জোনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহিউদ্দিন আহমদ বলেন, “হোটেলে ৫০ শতাংশের অধিক কক্ষ ভাড়া দেওয়া যাবেনা। রেস্টুরেন্টসহ সবখানে পর্যটকদের শতভাগ স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। সঠিকভাবে স্বাস্থ্যবিধিসহ সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্দেশনা মানা না হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বলেন, “পর্যটন খোলা হলেও সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে। এজন্য কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সতর্ক দৃষ্টিতে থাকবে। আর পর্যটকদেরও দেশের নাগরিক হিসেবে স্বাস্থ্যবিধি মানা প্রয়োজন। সামাজিক দূরত্বের পাশাপাশি স্যানিটাইজার ও মুখে মাস্ক পরতে হবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট সকলকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
মতামত দিন