খালাতো ভাইয়ের স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় নির্যাতন করা হয়েছে দাবি ভুক্তভোগী ওই ব্যক্তির
পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে এক যুবককে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় রাতভর নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (৬ আগস্ট) রাতে এ ঘটনা ঘটে। সম্প্রতি এ নির্যাতনের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়ে ছড়িয়ে পড়ে।
নির্যাতনের শিকার সমির হালদার (৩৫) নাজিরপুর উপজেলার শাঁখারীকাঠি ইউনিয়নের উত্তর হোগলাবুনিয়া গ্রামের সুনীল হালদারের ছেলে। তিনি বর্তমানে নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।
নির্যাতনের শিকার সমির হালদার জানান, তার খালাতো ভাইয়ের স্ত্রীকে উত্ত্যক্ত করার প্রতিবাদ করায় পাকুরিয়া গ্রামের সিক্ত সরকার, ননী বেপারী, সুব্রত মালী, গোবিন্দ মালী, রতন মালী, মানিক মালী, অনূপ মন্ডল, রতন বৈরাগী, দীপক মালীসহ আরও বেশ কয়েকজন গত ৬ আগস্ট রাত ১০ টার দিকে তাকে জোরপূর্বক বের করে নিয়ে হাত-পা বেঁধে রাতভর নির্যাতন করে। পরদিন সকাল ৭টার দিকে তাকে ছেড়ে দিলে তিনি স্থানীয়দের সহায়তায় নাজিরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী থানায় লিখিত অভিযোগ করলে পুলিশ তা সাধারণ ডায়েরী হিসেবে গ্রহণ করেছে।
সমির হালদারের এক স্বজন জানান, “সমিরের কাছে আমার ৫০ হাজার টাকা পাওনা ছিলো। সমির তার মোটর সাইকেল বিক্রি করে আমার পাওনা টাকা দেওয়ার জন্য ওই রাতে আমার বাড়িতে আসে। পরে তাকে সামনের বারান্দায় ঘুমাতে দেই। রাত ১২ টার দিকে ঘরে বাহির থেকে ডাকাডাকির আওয়াজ শুনতে পাই। তখন কে ডাকছে জানতে চাইলে বাহির থেকে বলে আমি শিক্ত সরকার, দরজা খুলেন। আমি তাকে চিনতে পারায় ঘরের দরজা খুলে দেওয়া মাত্র ৪ থেকে ৫ জন ঘরে ঢুকে। এসময় তারা সমিরকে টানা-হেচড়া করে বাহিরে নিয়ে যায়। পাশের বাড়ির মিলে নিয়ে তারা হাত-পা বেঁধে রাতভর মারধর করে।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত সিক্ত সরকারের মুঠো ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
অপর অভিযুক্ত ননী বেপারীর সঙ্গে কথা হলে তিনি জানান, চোর ধরা পড়েছে শুনে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। তবে আমি মারধর করিনি। আপনি ভাইরাল হওয়া ভিডিও দেখতে পারেন, সেখানে আমি মারধর করেছি, এমন দৃশ্য নাই।
বৈঠাকাটা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ শেখ আউয়াল কবির বলেন, “অভিযোগ পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিযোগটি অধর্তব্য অপরাধ হওয়ায় জিডি করে তদন্তের অনুমতি চেয়ে বিজ্ঞ আদালতে আবেদন করা হয়েছে।”
নাজিরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আশ্রাফুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় একটি জিডি করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মতামত দিন