এখন দামও একটু বেশি তাই ব্যবসায়ী ও জেলেদের মুখে ফুটেছে হাসি
কক্সবাজারে জেলে পরিবারগুলোতে চলছে আনন্দের বন্যা। সাগরে মাছ ধরার নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়ায় চলতি সপ্তাহে জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে রূপালী ইলিশ। ট্রলার ভর্তি ইলিশ নিয়ে কক্সবাজার ফিশারি ঘাটে ফিরলে বইছে উৎসবের।
শুধু ইলিশ নয়, ধরা পড়ছে রূপচাঁদা, পোয়া, রিটা, থাইল্যা, ছুরি, লইট্যাসহ নানা প্রজাতির সামুদ্রিক মাছ। এখন দামও একটু বেশি তাই ব্যবসায়ী ও জেলেদের মুখে ফুটেছে হাসি। আড়তগুলোতেও ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্যতা।
বৈরি আবহাওয়া ও ৬৫ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে সাগরে গেলেও প্রথম কয়েকদিনে ইলিশের দেখা পায়নি জেলেরা। কিন্তু গত এক সপ্তাহে পাল্টে গেছে চিত্র। সাগর থেকে হাজার হাজার ইলিশ নিয়ে ঘাটে ফিরছে শত শত ফিশিং ট্রলার। ঘাট থেকে ডিঙি নৌকায় ঝুড়ি নিয়ে মোকামে তোলা হচ্ছে ছোট বড় ইলিশ। ব্যবসায়ীদের হাক ডাক ও বেচা-বিক্রিতে সরগরম হয়ে উঠেছে ফিশারি ঘাট নামে পরিচিত কক্সবাজারের মৎস্য অবতরণ কেন্দ্র।
ফিশিং ট্রলারের কয়েকজন জেলে জানান, অনেক দিন মৎস্য শিকার বন্ধ থাকায় অনেক কষ্টে দিন গেছে। তার উপর করোনার দুর্যোগও ছিল। সবমিলিয়ে অনেক দুঃখ কষ্টে পরিবার পরিজন নিয়ে দিন কাটাতে হয়েছে তাদের। এবার সাগরে প্রচুর পরিমাণ মাছ ধরা পড়ায় হয়তো সেই দুঃখ কষ্ট লাগব হবে।
উখিয়ার সোনারপাড়া জেলে পল্লীর নুর হোসেন জানান, এক সপ্তাহ সাগরে থাকার পর মাছ নিয়ে উপকুলে ফিরেছেন। এবারের ইলিশগুলো আকারে বড় হওয়ায় চড়া দামে বিক্রি করা সম্ভব হচ্ছে। এতে জেলেদের পাশাপাশি বোটের মালিক (বহদ্দার) লাভবান হচ্ছে।
কক্সবাজার মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি জানে আলম পুতু বলেন, “প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণ ইলিশ নিয়ে ফিরছে ট্রলারগুলো। নিষেধাজ্ঞাকালীন সময়ে যে ক্ষতি হয়েছে আশা করি তা পুষিয়ে নিয়ে লাভের মুখ দেখবে ব্যবসায়ী ও ফিশিং ট্রলার মালিকেরা।”
কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক মো. এহসানুল হক বলেন, “ট্রলারগুলো ফিরতে শুরু করায় মাছের পরিমাণ ও রাজস্ব উভয়ই বৃদ্ধি পাচ্ছে। প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ মাছ ভর্তি ট্রলার উপকূলে ভিড়ছে। কক্সবাজার মৎস্য অবরণকেন্দ্র ছাড়াও কুতুবদিয়া, মহেশখালী, উখিয়া ও টেকনাফ উপকুলে ইলিশ ধরার উৎসবে পরিণত হয়েছে।”
সামুদ্রিক মৎস্য জরিপ ব্যবস্থাপনা ইউনিট কক্সবাজারের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা হাসান আনোয়ারুল কবির জানান, মৎস্য অধিদপ্তর আওতায় গবেষণার মাধ্যমে সাগর থেকে মাছ আহরণে ৬৫দিনের বন্ধ থাকার ফলে সাফল্য এসেছে।
কক্সবাজার জেলা মৎস্য কর্মকর্তা এস এম খালেকুজ্জামান বলেন, “গত বছর জেলায় ইলিশ আহরণ হয়েছিল ১৫ হাজার ২৫৬ মেট্রিক টন। এবার ইলিশ আহরণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ১৭ হাজার মেট্রিক টন।”
মতামত দিন