ছয় বছর আগে অপহরণের অভিযোগে হওয়া মামলায় আদালতে স্বীকারোক্তিও দেন তিনি
বগুড়া সদর উপজেলার কর্ণপুর গ্রামের মধু ব্যবসায়ী শামীম। তিনি “গুম” হন বলে খবর রটে ২০১৫ সালে। ওই ঘটনায় শামীমের মা বাদী হয়ে তার বন্ধু আজিজারের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেন। ওই মামলায় সাড়ে চার মাস কারাগারেও থাকতে হয়েছিল আজিজারকে। এরপর উচ্চ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান তিনি।
সেবার শামীম আসলে গুম হননি। তিনি ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন।
তার একসময়ের বন্ধু আজিজার জানান, বাল্য বন্ধু শামীম তার কাছ থেকে এক লাখ টাকা, একটি বাইসাইকেল ও ২৬ হাজার টাকা দামের একটি মোবাইল ফোন নিয়েছিলেন। ২০১৫ সালের ২ জানুয়ারি অর্থ ও জিনিসগুলো ফেরত দেওয়ার জন্য আজিজারকে কর্ণপুরের বাড়িতে ডাকেন তিনি।
কিন্তু সেদিনই ভারতে পালিয়ে যান শামীম। কিছুদিন পর তার মা ঝর্ণা বেগম সদর থানায় ছেলেকে “অপহরণের পর গুম করার” অভিযোগে আজিজারের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল আজিজারকে গ্রেপ্তার করে। দু’দফায় ছয়দিন রিমান্ডে নেওয়ার পর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করা হয় তাকে।
এদিকে, তিন বছর ধরে এলাকাতেই আছেন শামীম। সোমবার (৯ আগস্ট) আজিজার রহমানের গ্রাম মানকিচকে ত্রাণ নিতে গেলে তাকে আটকে রাখার চেষ্টা করেন আজিজারের ভাই হাফিজার। সেখান থেকে কোনোরকমে পালিয়ে থানায় গিয়ে তার হামলার অভিযোগ আনেন শামীম।
অভিযোগ পেয়ে বগুড়া সদর থানা পুলিশ শামীমকে নিয়ে মানকিচক গ্রামে যায় এবং পুরো বিষয়টি জানতে পারে।
আজিজারের অভিযোগ, সেবার মায়ের সহায়তায় ভারতে পালিয়ে গিয়েছিলেন শামীম। আর পুলিশ তাকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিতে বাধ্য করেছে।
তবে শামীমের দাবি, সেবার (২০১৫ সালে) আজিজার তাকে হত্যার চেষ্টা করলে ভারতে পালিয়ে যান তিনি। সেদেশে ২৬ মাস জেলও খাটতে হয় তাকে। এরপর বাড়িতে ফিরে এসে তিন বছর ধরে স্বাভাবিক জীবনযাপন করছেন।
এ বিষয়ে বগুড়া সদর থানায় পরিদর্শক (তদন্ত) আবুল কালাম আজাদ বলেন, “শামীম তিন বছর আগে থেকেই এলাকায় আছেন। ওই অপহরণ মামলার ব্যাপারে আমাদের কিছু জানা নেই। কোনো অভিযোগ না থাকায় শামীমকে ছেড়ে দেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।”
মতামত দিন