এ অঞ্চলের জলবায়ুর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব প্রশমনের জন্য তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানেও বিশ্ব নেতাদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি
বাংলাদেশের পক্ষে অনির্দিষ্টকালের জন্য রোহিঙ্গাদের বোঝা বহন করা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। শুক্রবার (৬ আগস্ট) আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের (এএফআর) ২৮তম সভায় বক্তব্যকালে তিনি এ কথা জানান।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যদিও বাংলাদেশ ১৯৫১ সালের শরণার্থী কনভেনশন বা ১৯৬৭ সালের প্রটোকলের স্বাক্ষরকারী নয়। তথাপি শুধুমাত্র মানবিক দিক বিবেচনায় ১১ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ। ৬,৮০০ একর সার্বভৌম বনভূমি আপস করে বাংলাদেশের পক্ষে অনির্দিষ্টকালের জন্য এ বোঝা বহন করা সম্ভব নয়।
২৮তম আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামের সভা অনুষ্ঠিত হয় ব্রুনেইয়ে। এবারের বৈঠকে বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের ভার্চ্যুয়ালি নেতৃত্ব দেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. মোমেন। বিভিন্ন রাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী, উপ-পররাষ্ট্রমন্ত্রীসহ ২৬টি সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা এবারের বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও অন্যান্য দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বিভিন্ন আঞ্চলিক ইস্যু যেমন রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট, জলবায়ু পরিবর্তন, পরমাণু, সাইবার নিরাপত্তা ও অন্যান্য আঞ্চলিক সমস্যা সম্পর্কে সম্ভাব্য সহযোগিতার বিষয়ে পারস্পরিক মতবিনিময় করেন।
সভায় এ অঞ্চলের জলবায়ুর ওপর ক্ষতিকর প্রভাব প্রশমনের জন্য তিনি রোহিঙ্গা সংকট সমাধানেও বিশ্ব নেতাদের সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
এছাড়া, জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশের নেতৃত্বদানকারী ভূমিকা সম্পর্কেও সভায় বক্তব্য রাখেন তিনি। তিনি বৈশ্বিক জলবায়ু অগ্রগতির উদ্দেশ্যে প্যারিস চুক্তির বাস্তবায়ন ত্বরান্বিত করতে নেতাদের প্রতি আহবান জানান।
এআরএফ সদস্য দেশ অস্ট্রেলিয়া, ভারত, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া, নিউজিল্যান্ড, ফিলিপাইন, দক্ষিণ কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন দ্রুততম সময়ে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে একমত প্রকাশ করে রোহিঙ্গাদের নিরাপদ, টেকসই ও মর্যাদাপূর্ণ স্বদেশ প্রত্যাবাসনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বক্তব্যকালে ড. মোমেন নিরস্ত্রীকরণকে বাংলাদেশের শান্তিকেন্দ্রিক পররাষ্ট্রনীতির একটি মূল বৈশিষ্ট্য হিসেবে চিহ্নিত করে বলেন, জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে আন্তর্জাতিক নিরস্ত্রীকরণ চুক্তি ও অন্যান্য দলিলের প্রতি প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্তকরণসহ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ায় সক্রিয় ভূমিকা পালন করে।
এছাড়া, তিনি কথা বলেন করোনাভাইরাস টিকার সার্বজনীনতা নিয়েও। তিনি জানান, এর প্রযুক্তি সবার মধ্যে সমভাবে বণ্টন হওয়া উচিত। সেই সঙ্গে সাশ্রয়ী মূল্যে ভ্যাকসিন উৎপাদনের ওপরও জোর দেন তিনি।
মতামত দিন