ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানায় পুলিশ হেফাজতে বগুড়ার ট্রাকচালক লিটন প্রামানিকের (৪৫) মৃত্যুর অভিযোগ করেছে বগুড়া আন্তঃজেলা ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন
রাজধানীর উত্তরা (পূর্ব) থানায় পুলিশ হেফাজতে বগুড়ার ট্রাকচালক লিটন প্রামানিকের (৪৫) মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে বগুড়া আন্তঃজেলা ট্রাক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়ন। এ ঘটনার বিচারের দাবিতে বুধবার (৪ আগস্ট) ঢাকা-রংপুর মহাসড়কে ভবের বাজার এলাকায় লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সসহ দুই ঘণ্টা অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন শ্রমিকরা।
এ সময় মহাসড়কের উভয় পাশে শত শত পণ্যবাহী ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন আটকা পড়ে। ‘‘পুলিশ হেফাজতে ট্রাকচালক লিটনকে হত্যা করা হয়েছে’’ উল্লেখ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন শ্রমিক নেতারা। অন্যথায় দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলন কর্মসূচির হুঁশিয়ারি দেন তারা।
এ বিষয়ে সদর থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা জানান, শ্রমিকরা প্রায় এক ঘণ্টা মহাসড়ক অবরোধ করে রেখেছেন। তদন্ত সাপেক্ষে বিচারের আশ্বাস দেওয়ায় তারা অবরোধ প্রত্যাহার করেন।
বুধবার সকালে ট্রাকচালক লিটন প্রামানিককের লাশ অ্যাম্বুলেন্সে করে কাহালু উপজেলার পাল্লাপাড়া গ্রামে নিয়ে যাওয়ার সময় বগুড়া শহরের ভবের বাজার এলাকায় আন্তঃজেলা ট্রাক টার্মিনালের সামনে থামানো হয়। এ সময় শ্রমিকরা বিক্ষোভ ফেটে পড়েন। বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা শহরের চারমাথায় কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল এলাকায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন।
সেখান উপস্থিত থেকে বগুড়া আন্তঃজেলা ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল মান্নান মন্ডল জানান, নিহত ট্রাকচালক লিটন প্রামানিক বগুড়ার কাহালু উপজেলার পাল্লাপাড়া গ্রামের সোলায়মান প্রামানিকের ছেলে। লিটন তাদের সংগঠনের সদস্য। তিনি গত ৩০ জুলাই চট্টগ্রাম থেকে ট্রাকে (ঢাকা মেট্রো-ট-২৪-২৫৬৩) চাল নিয়ে নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে সরকারি গুদামের দিকে রওনা হন। পথিমধ্যে তিনি ট্রাক রাস্তার পাশে রেখে একটি দোকানে যান। তখন র্যাব সদস্যরা তাকে আটক করে ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানায় সোপর্দ করেন।
আবদুল মান্নান মন্ডল অভিযোগ করে বলেন, “ঢাকার উত্তরা পূর্ব থানায় ৩১ জুলাই থেকে ২ আগস্ট পর্যন্ত আটক লিটন প্রামানিককে পুলিশ নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করে। প্রচার করা হয়, লিটন হাজতে গলায় কম্বলের ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পরদিন ৩ আগস্ট দেশের বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলে আত্মহত্যার খবর প্রচার করা হয়।”
তিনি এটিকে হত্যাকাণ্ড উল্লেখ করে জড়িত উত্তরা পূর্ব থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের অপসরণসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে বলেন, “অন্যথায় দেশব্যাপী কঠোর আন্দোলনের ডাক দেওয়া হবে। এতে পরিবহন সেক্টরে অচলাবস্থার সৃষ্টি হলে এর দায় প্রশাসনকে নিতে হবে।”
মতামত দিন