৩১ জুলাই ভোর থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ রাজধানীর দিকে ছুটতে শুরু করেন
ঈদের ছুটি কাটিয়ে গত কয়েকদিনে যার যার মতো করে কর্মস্থলে ফিরেছে রপ্তানিমুখী কারখানার শ্রমিকরা। তবুও রাজবাড়ীর দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে এখনও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঢাকামুখী যাত্রীরা ভিড় করছেন।
লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় এ ঘাটে মঙ্গলবার (৩ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীমুখী মানুষের ভিড় বেশি ছিল।
দুপুরে ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে চলাচল করছে নয়টি ফেরি। ঘাটে ভেড়ামাত্রই সেসব ফেরিতে যানবাহনের সঙ্গে ঘাটে অপেক্ষমাণ শত শত মানুষ উঠে পড়ছেন। কথা বলে জানা যায়, মোটরসাইকেল, মাহিন্দ্রা, অটোরিকশা, প্রাইভেটকার বা মাইক্রোবাসে করে তারা ঘাট পর্যন্ত এসেছেন। এদিকে, ফেরিঘাট থেকে দৌলতদিয়া টার্মিনাল পর্যন্ত লম্বা লাইনে অপেক্ষা করছিল শতাধিক গাড়ি।
রাজবাড়ীর পাংশা থেকে মাকে নিয়ে রাজধানীতে যাচ্ছেন ব্যবসায়ী চিত্তরঞ্জন বিশ্বাস। দৌলতদিয়ার ৫ নম্বর ফেরিঘাটে তার সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, “ঢাকায় ব্যবসা করি। সেখানেই পরিবার নিয়ে থাকি। ঈদের এক দিন পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক দেখে বাড়ি ফিরে আসি। এর মধ্যে মা অসুস্থ হয়ে পড়ায় আজ মাকে নিয়ে ঢাকায় ফিরছি। মাকে ডাক্তার দেখাতে হবে।”
কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে আসতে পথে কোথাও কোনো সমস্যায় পড়তে হয়েছে কি-না, জানতে চাইলে তিনি বলেন, “রাস্তায় কয়েক জায়গায় পুলিশ দেখেছি। তবে আমাদের কোথাও বাধা দেয়নি। তবে গণপরিবহন না থাকায় স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ ভাড়া দিয়ে ঘাটে আসতে হলো। এখন নদী পাড়ি দিয়ে ভালোয় ভালোয় কোনো যানবাহন পেলেই ঢাকা যেতে পারব।”
ফেরিঘাট এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আসগর আলী মোল্লা বলেন, “৩১ জুলাই ভোর থেকে প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রমজীবী মানুষ রাজধানীর দিকে ছুটতে শুরু করেন। পরদিনও শত শত মানুষ ফেরি পার হয়েছেন। এরপর সোমবার থেকে মানুষের চাপ কমে অনেকটা স্বাভাবিক হয়ে আসে। আজ মঙ্গলবার আবার মানুষের ভিড় দেখছি। হয়তো অনেকে ৫ তারিখে বিধিনিষেধ শেষ হওয়ার আশায় ছিলেন। কিন্তু তা হয়নি। এ কারণে অনেকে এখনই রাজধানীর দিকে ছুটছেন।”
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক জামাল হোসেন বলেন, “যানবাহন ও মানুষের চাপ কমে যাওয়ায় ফেরির সংখ্যা কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে এখন ছোট-বড় মিলিয়ে মোট নয়টি ফেরি চলাচল করছে। সকালের দিকে মানুষের চাপ কম ছিল, তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভিড়ও বাড়তে থাকে।”
মতামত দিন