টানা কয়েকদিন ধরে ভারি বর্ষণে কক্সবাজারে সৃষ্ট বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে
টানা কয়েকদিন ধরে ভারি বর্ষণে কক্সবাজারে সৃষ্ট বন্যার পানি নামতে শুরু করেছে। এতে ভেসে উঠছে ক্ষতচিহ্ন। ফসলির জমির পাশাপাশি গ্রামীণ সড়কগুলো ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দুর্গত এলাকায় বসবাসরত মানুষের মাঝে দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্যের সংকট। অবশ্য, এসব বিশুদ্ধ পানি ও খাদ্য সংকটে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেয়া হচ্ছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা।
কক্সবাজার জেলায় কয়েকদিন ধরে ভারি বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে চকরিয়া, রামু, কক্সবাজার সদর, টেকনাফ এবং উখিয়ার ৫১ টি ইউনিয়নের আড়াই লাখ মানুষ। পানিতে ডুবে আছে কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের কয়েকটি স্থান। এসব এলাকায় খাদ্য সংকটে পড়েছে বন্যার্ত মানুষেরা। চলছে বিশুদ্ধ পানীয় জলের তীব্র সংকট। ফলে বন্যা দুর্গত এই মানুষ গুলো পড়েছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগে।
এদিকে বন্যার্ত মানুষদের সহযোগিতার জন্য ছুটে চলছে প্রশাসনের লোকজন ও জনপ্রতিনিধিরা। তারা রান্না করা খাবার এবং শুকনো খাবার পৌঁছে দিচ্ছে ঘরে ঘরে। একই সাথে ত্রাণ সামগ্রীও দেয়া হচ্ছে।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ জানিয়েছেন, বন্যা কবলিত এসব মানুষের জন্য ৩০০ মেট্রিক টন চাল ও নগদ ২০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে। সরকারের পাশাপাশি যার যার অবস্থান থেকে বন্যা কবলিত মানুষের পাশে এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে স্বাস্থ্য সেবা, রাস্তাঘাট, কৃষি, মৎস্য, লবণ, ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ সংস্কার করা হবে। ইতোমধ্যে কক্সবাজার সদরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মুজিবুর রহমান, সদর, ঈদগা ও রামুতে সাংসদ সাইমুন সরওয়ার কমল এবং চকরিয়া ও পেকুয়ায় সাংসদ জাফর আলমসহ অন্যান্য জনপ্রতিনিধি ও নেতারা সহায়তা নিয়ে মানুষের কাছে ছুটে যাচ্ছেন।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছেন, জেলার ৭১ ইউনিয়ন ও ৪টি পৌরসভার মধ্যে ৫১ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ৫২৫ টি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। এতে ৭৬ হাজার ৫০০ পরিবারের আড়াই লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছিল। প্রাথমিকভাবে ক্ষতির পরিমাণ ৩২ কোটি টাকা বলে ধারনা করা হচ্ছে। প্লাবিত এলাকার জন্য ইতিমধ্যে ৩০০ মেট্রিক টন চাল ২ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার ও ১৫ লাখ টাকা প্রদান করেছে। পানি শুকিয়ে গেলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করে জানা সম্ভব হবে।
উল্লেখ্য, গত তিন ধরে ভারি বর্ষণে পাহাড় ধস ও বন্যার পানিতে ভেসে ২০জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে।
মতামত দিন