প্রকল্পের আওতায় বিদেশে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিখতে ১০ কর্মকর্তার ৫০ লাখ আর একটি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করতে প্রায় ৩৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে
“বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী, ঠাকুরগাঁও” শীর্ষক এক প্রকল্পের ব্যয়ের তথ্য বিশ্লেষণ করে অস্বাভাবিক ব্যয় ধরা পড়েছে। এ প্রকল্পের আওতায় পার্শ্ববর্তী কোনো দেশে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিখতে যাবেন মোট ১০ জন কর্মকর্তা। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০ লাখ টাকা। আর একটি ডিপ টিউবওয়েল স্থাপন করতে প্রায় ৩৬ লাখ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। অনলাইন সংবাদ পোর্টাল ঢাকা পোস্ট এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য জানিয়েছে।
ওই প্রতিবেদেনে বলা হয়েছে, বুধবার (২৮ জুলাই) জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় ওই প্রকল্প অনুমোদন পায়। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের আকচা মৌজায় ৫০ একর জায়গায় ৯৮ কোটি ৬১ লাখ টাকা ব্যয়ে “বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী, ঠাকুরগাঁও” বাস্তবায়ন করবে শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সংস্থা বিসিক।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঠাকুরগাঁওয়ে ডিপ টিউবয়েল স্থাপনের প্রয়োজন পড়ে না, ওই এলাকায় সহজেই পানি পাওয়া যায়। ৭৫ মিটারের মধ্যে পানি পাওয়া গেলে শ্যালো টিউবওয়েলই ভালো পানি পাওয়া যায়। কিন্তু এর মধ্যে যদি পানি পাওয়া না যায়, তাহলে ডিপ টিউবওয়েল বসাতে হয়। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের আওতায় শ্যালো টিউবওয়েল বসাতে এক থেকে দেড় লাখ টাকা এবং ৪ ইঞ্চি পাইপের ডিপ টিউবওয়েল বসাতে তিন থেকে সাড়ে তিন লাখ টাকা খরচ হয়।
অস্বাভাবিক ব্যয়ের বিষয়ে বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশনের (বিসিক) চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত সচিব) মো. মোশ্তাক হাসান বলেন, “এই ব্যয় ডিপিপিতে থাকলেও পরবর্তীতে খরচ না হলে এগুলো আমরা সমন্বয় করে কাজে লাগাবো। একটি শিল্প নগরীতে ৩৬ লাখ টাকা দিয়ে ডিপ টিউবওয়ের হয়? ডিপ টিউবওয়েল বসাতে ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা লাগে। আমরা যেটা নির্ধারণ করেছি সেটা অনেক আগের হিসেবে করা হচ্ছে। এখন বাস্তবে করতে গেলে আরও বেশি টাকা খরচ হবে। আমার জানা মতে, বর্তমানে ডিপ টিউবওয়েল করতে ৪০ লাখ টাকার বেশি লাগে। আমাদের এ খাতে খরচ কমই আছে বলে আমার মনে হচ্ছে।”
বৈদেশিক প্রশিক্ষণ বিষয়ে তিনি বলেন, “আমাদের প্রকল্পে সাধারণত বৈদেশিক প্রশিক্ষণ হয় না। আমি এখানে আড়াই বছরে একটি প্রকল্পেও বৈদেশিক প্রশিক্ষণ পাইনি। এটা হয়তো অন্য কারণে হতে পারে। তাছাড়া যেহেতু খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পনগরী বাংলাদেশে আর নেই, সেজন্যই মনে হয় এটা রাখা হয়েছে। কারণ, আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলো এসব নগরীতে কিভাবে খাদ্য প্রক্রিয়া করে সেটার বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতেই মনে হয় খাতটি রাখা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২৯ মার্চ ঠাকুরগাঁও জেলা সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ জেলায় খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চল স্থাপনের প্রতিশ্রুতি দেন। প্রধানমন্ত্রীর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় থেকে বিসিককে চিঠি দেওয়া হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ৫০ একর জমিতে বিসিক খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ শিল্পনগরী, ঠাকুরগাঁও স্থাপনের জন্য সম্ভাব্যতা যাচাই করা হয়। যার প্রেক্ষিতে এই প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়েছে।
মতামত দিন