হ্যাকারদের কম্পিউটারে ত্রুটি দেখা না দিলে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলারের স্থলে খোয়া যেত ১০০ কোটি ডলার
২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার চুরি যায়। যদিও হ্যাকারদের লক্ষ্য ছিল ১০০ কোটি ডলার চুরি করা। কিন্তু কম্পিউটার প্রোগ্রামে জটিলতায় তা সম্ভব হয়নি। ব্রিটিশ সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এই চুরির ঘটনা নিয়ে একটি অনুসন্ধানী প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বিবিসি বলছে, “হ্যাকাররা বাংলাদেশ ব্যাংকের কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ঢুকে পড়েছিল এবং সৌভাগ্যবশত তাদের কম্পিউটারে ত্রুটি দেখা না দিলে ২০১৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ৮ কোটি ১০ লাখ ডলার নয়, বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে খোয়া যেত ১০০ কোটি ডলার। আর চুরির ঘটনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি ত্রুটিযুক্ত প্রিন্টারের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের দশম তলার একটি কক্ষে খুবই সুরক্ষিত অবস্থায় থাকা সেই প্রিন্টারটির মাধ্যমে দেশ ও দেশের বাইরে বাংলাদেশ ব্যাংকের অর্থ আদান-প্রদানবিষয়ক তথ্য ও রেকর্ডের অনুলিপি বাংলাদেশ ব্যাংক কর্মকর্তাদের হাতে আসত। সেই প্রিন্টারটি ঠিকঠাকমতো কাজ করছিল না। শুরুতে অবশ্য বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বিষয়টিকে সাধারণ যান্ত্রিক ত্রুটি হিসেবেই দেখেছিলেন।
তাদের মনে হয়েছিল, প্রিন্টারে একটি ‘ছোট সমস্যা’ দেখা দিয়েছে, ‘সময়মতো’ সেটি ঠিক করে নেওয়া যাবে।
হ্যাকিংয়ের মাধ্যমে পাচার হওয়া এই অর্থ প্রথমে ফিলিপাইনের মাকাতি শহরের রিজাল ব্যাংকের ৪টি ভুয়া অ্যাকাউন্টে নেওয়া হয়। তারপর সেখান থেকে দ্রুত এই অর্থ উত্তোলন করেন হ্যাকাররা।
এই চুরির নেপথ্যে যারা ছিল তারা সবাই উত্তর কোরিয়ার নাগরিক এবং দেশটির ক্ষমতাসীন সরকারের মদদপুষ্ট।
বাংলাদেশ ব্যাংকের ডিউটি ম্যানেজার জিয়া বিন হায়দার এ সম্পর্কে পুলিশকে বলেছিলেন, “আমরা প্রথমে ভেবেছিলাম প্রতিদিন যেমন কম্পিউটারে ছোটখাটো সমস্যা দেখা যায় এটিও সেরকম একটি ব্যাপার। এর আগেও ব্যাংকের বিভিন্ন শাখার কম্পিউটার-প্রিন্টারে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিয়েছিল, যথাসময়ে সেগুলো ঠিকও করা হয়েছে।”
উল্লেখ্য, শেষ পর্যন্ত মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআইয়ের সহযোগিতায় মাত্র দেড় কোটি ডলার উদ্ধারে সমর্থ হয়েছিল বাংলাদেশ।
মতামত দিন