বৃহস্পতিবার (১০ জুন) সকাল সাড়ে ১০টায় গণভবন থেকে একযোগে আধুনিক ও সুসজ্জিত এই মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘মুজিব বর্ষ’ উপলক্ষে আজ সারাদেশে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন। প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় ১টি করে সর্বমোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিক পর্যায়ে এই ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১০ জুন)সকালে প্রধানমন্ত্রী তার সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ধর্ম মন্ত্রণালয় কতৃর্ক আয়োজিত এ সংক্রান্ত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।
ইসলামের প্রকৃত মর্মবাণী প্রচারে এই মসজিদগুলো ভূমিকা রাখবে বলে এ সময় দেয়া ভাষণে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘ইসলামের মর্মবাণী যেন এদেশের মানুষ জানতে পারে, বুঝতে পারে, আমরা বাংলাদেশের মানুষ ধর্ম নিরপেক্ষতায় বিশ্বাস করি, স্ব-স্ব ধর্ম যত্ন সহকারে লালন পালন করি এবং সংরক্ষণ করি। ইসলাম আমাদেরকে সেই মানবতার শিক্ষাই দিয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, বিশ্বের একটি অন্যতম বৃহৎ মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ এই দেশে সঠিক ইসলামী মূল্যবোধের চর্চা ও উন্নয়ন এবং ইসলামী সংস্কৃতি বিকাশের উদ্দেশ্যেই আমরা প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের প্রকল্প বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
২০১৪ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুযায়ী প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি উন্নত মসজিদ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সরকার সারাদেশে ৮ হাজার ৭শ’ ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। বিশে^ এ ধরনের প্রকল্প নজিরবিহীন। পদ্মা বহুমুখী সেতুর পর নিজস্ব অর্থায়নে এটা সরকারের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রকল্প।
২০১৭ সালের ২৫ এপ্রিল প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদিত হয়। ধর্ম মন্ত্রণালয় এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশনের এই যৌথ উদ্যোগকে বাস্তাবায়িত করেছে সরকারের গণপূর্ত অধিদপ্তর।
সরকার প্রধান অনুষ্ঠান থেকে খুলনা জেলা মডেল মসজিদ, রংপুর জেলার বদরগঞ্জ উপজেরা মডেল মসজিদ এবং সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলা মডেল মসজিদের ধর্মপ্রাণ মুসল্লিদের সঙ্গে মত বিনিময় করেন।
এ প্রকল্পের আওতায় জেলা সদর ও সিটি করপোরেশন পর্যায়ে ৪ তলা এবং উপজেলা ও উপকূলীয় এলাকায় ৩ তলা মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র নির্মিত হচ্ছে। মূল মসজিদটি হবে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত। মহিলাদের জন্য পৃথক নামাজ কক্ষের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী মুসল্লিদের নামাজ কক্ষে সহজে প্রবেশের সুবিধার্থে স্থাপন করা হয়েছে।
৪ তলা বিশিষ্ট প্রতিটি মসজিদে একসঙ্গে ১২০০ জন মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারবেন।
অপর দিকে, ৩ তলা মডেল মসজিদগুলোতে একত্রে ৯০০ জন মুসল্লির নামাজ আদায়ের ব্যবস্থা থাকবে।
এছাড়া মসজিদে কুরআন চর্চার জন্য হিফজখানা, হজযাত্রী ও ইমামদের জন্য প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, মুসল্লিদের জ্ঞান আহরণের জন্য মসজিদে নববীর আদলে ইসলামিক লাইব্রেরির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। মসজিদ কমপ্লেক্স এর মধ্যে পৃথক ভবনে ইসলামি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন করা হয়েছে। সেখানে থাকবে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অফিস, কনফারেন্স হল, গবেষণা কক্ষ, প্রতিবন্ধী কর্নার, হজযাত্রীদের প্রাকনিবন্ধন ও দেশী-বিদেশী পর্যটকদের আবাসনের ব্যবস্থা ইত্যাদি।
মতামত দিন