দস্তখত গ্রহণের অজুহাতে এসআই আসাদুল গৃহবধূকে জড়িয়ে ধরেন
প্রতিবেশীর সঙ্গে বিরোধ নিয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন এক গৃহবধূ। সেই জিডি তদন্তের নামে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) আসাদুল থানায় ডেকে যৌন হয়রানি করেছেন বলে অভিযোগ করে আদালতে মামলা করেছেন ওই গৃহবধূ। বরিশাল কোতোয়ালি মডেল থানায় এ ঘটনা ঘটেছে।
যৌন হয়রানির অভিযোগে গত ২৪ মে বরিশাল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন ওই গৃহবধূ। তবে এক সপ্তাহ পর আজ সোমবার (৩১ মে) বিষয়টি জানাজানি হয়। মামলার বাদী জানান, পুলিশের চাপের মুখে এতদিন কাউকে বিষয়টি জানাতে পারেননি।
মামলার এজাহার উল্লেখ করা হয়েছে, নগরীর ধান গবেষণা রোড এলাকার বাসিন্দা ওই গৃহবধূ গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর কোতোয়ালি মডেল থানায় প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে একটি জিডি করেন। তা তদন্তের দায়িত্ব পান কোতোয়ালি মডেল থানার এসআই আসাদুল। তিনি জিডির বিষয়টি তদন্তের জন্য বাদীকে থানায় ডেকে নেন। ১৬ অক্টোবর বাদী থানায় গেলে এসআই আসাদুল নানা অজুহাতে তার রুমে বাদীকে বসিয়ে রাখেন। এরপর দস্তখত গ্রহণের অযুহাতে এসআই আসাদুল বাদীর শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দেন এবং ঘাড়ে চুমু দেন। এর প্রতিবাদ জানালে মামলার আসামি বাদীকে জোরপূর্বক জড়িয়ে ধরেন এবং বিবাহ করার আশ্বাস দেন। এ সময় বাদীর স্বামী এসে পড়লে এসআই আসাদুল ওই নারীকে ছেড়ে দেন।
এ ঘটনার পরপরই বাদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানালে তিনি বিচার করবেন বলে আশ্বস্ত করেন। ওসি তখন জানান অভিযোগের বিষয়ে একজন নারী এএসআই তদন্ত করবেন। যৌন হয়রানির শিকার গৃহবধূ ওই এএসআইয়ের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলে জানতে পারেন তিনি কিছুই জানেন না। মূলত অসত্য অযুহাতে কালক্ষেপণ করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। সেই সঙ্গে থানায় লিখিত এজাহার দিতে চাইলে তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানান। মামলায় থানার সিসিটিভি ক্যামেরা পর্যালোচনা করলে ঘটনার সত্যতা পাওয়া যাবে বলেও বাদী উল্লেখ করেছেন।
বাদীর আইনজীবী আসাদুজ্জামান হাওলাদার জানান, মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্তের জন্য পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলামকে জানান, “ভুক্তভোগী নারী যে ‘মেন্টালি সিক’ তা কথা বললেই বুঝতে পারবেন। এই ঘটনায় ভুক্তভোগী আদালতে গেছেন। পিবিআই'র তদন্ত চলমান আছে। এছাড়া আমাদের পক্ষেও তদন্ত চলমান আছে। তাই এই মুহুর্তে এর বেশি বলার কিছু নেই।”
এ বিষয়ে অভিযুক্ত আসাদুলের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগযোগ করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
মতামত দিন