মা মাছ রক্ষায় হালদা নদীতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করায় ডিম সংগ্রহে অতীতের পূর্ববর্তী সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন ডিম সংগ্রহকারীরা
দক্ষিণ এশিয়ার একমাত্র প্রাকৃতিক মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র অবস্থিত চট্টগ্রামের হালদা নদীতে, সেখানেই মা মাছ নমুনা ডিম ছেড়েছে। মঙ্গলবার (২৫ মে) রাত ১২টার পর হালদা নদীর কাগতিয়ার মুখ থেকে গড়দুয়ারা নয়াহাট পর্যন্ত বিভিন্ন নৌকার ডিম সংগ্রহকারীরা "নমুনা ডিম" পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
ডিম সংগ্রহকারীরা জানান, মঙ্গলবার কয়েক দফা বৃষ্টি হওয়ার পর ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ তৈরি হয়। এরপরেও এতদিন মা মাছগুলো পুরোদমে ডিম ছাড়েনি। তবে এবার মা মাছ রক্ষায় হালদা নদীতে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করায় ডিম সংগ্রহে অতীতের পূর্ববর্তী সকল রেকর্ড ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ধারণা করছেন ডিম সংগ্রহকারীরা।
চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রুহুল আমিন রাত ১টার দিকে হালদায় নমুনা ডিম ছাড়ার সত্যতা নিশ্চিত করেন। এ সময়ে তিনি জানান যে, হালদা নদীর নয়াহাট এলাকায় বিভিন্ন নৌকার ডিম সংগ্রহকারীরা জানিয়েছে তারা প্রতি জালে ১০০-১৫০ গ্রাম পর্যন্ত ডিম পেয়েছেন। পাশাপাশি তারা মা-মাছের আনাগোনাও দেখছেন।
তিনি আরও বলেন, যেহেতু নমুনা ডিম ছেড়েছে মা-মাছ, সেহেতু এসব মাছের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ যাতে মা-মাছ শিকার করতে না পারে সেদিকেও কঠোর নজরদারি রাখা হয়েছে।
ডিম থেকে রেণু ও পোনা তৈরির জন্য হ্যাচারিগুলোও প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, সাধারণত চৈত্র থেকে বৈশাখ মাসে অমাবস্যা, পূর্ণিমা ও অষ্টমী তিথিতে প্রবল পাহাড়ি ঢল ও শীতল আবহাওয়ায় হালদা নদীতে কার্প জাতীয় মাছ ডিম ছাড়ে। নমুনা ডিম মা মাছের প্রাকৃতিক প্রজননের জন্য প্রস্তুতির আভাস। অনুকূল পরিবেশ তৈরি হবার পরেই মা মাছ ডিম ছাড়বে।
এর আগে হালদা নদী থেকে ২০১৮ সালে ২২ হাজার কেজি এবং ২০১৯ সালে ১০ হাজার কেজি ডিম আহরণ করা হয়েছিল। পরবর্তীতে ২০২০ সালে ২৫ হাজার কেজি ডিম সংগ্রহ করে নতুন রেকর্ড করেছিল ডিম আহরণকারীরা।
উপজেলার উত্তর মাদার্শা এলাকার মাছুয়াঘোনা বাসিন্দা মাহবুবুল আলম জানান, বজ্রসহ প্রবল বৃষ্টিতে হালদায় মা মাছের ডিম ছাড়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়। আমরা রাত ৯টা থেকে ডিম সংগ্রহের জন্য নদীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান করেছিলাম। কিন্তু এদিন মা মাছগুলো পুরোদমে ডিম না ছাড়লেও কিছু নমুনা ডিম ছেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, "বজ্রসহ বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সাধারণত মা মাছগুলো ডিম ছাড়ে। অনুকূল পরিবেশ তৈরি হলে শিগগির মা মাছগুলো পুরোদমে ডিম ছাড়বে।"
মতামত দিন