দুই ভাইকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে, চুল কেটে নির্যাতন

পাবনার ঈশ্বরদীতে ভেজাল মধু সরবরাহের অপবাদে দুই সহোদরকে বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে, চুল কেটে অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া নুরজাহান বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে।

নির্যাতনের শিকার দাশুড়িয়া ইউনিয়নের দাঁদপুর গ্রামের আলম সরদারের দুই ছেলে আল আমিন (২৪) আলাল সরদার (১৮)।

পারিবারিক ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, ভেজাল মধু সরবরাহের অপবাদে সকাল থেকে আল আমিন ও আলালকে প্রখর রোদে বিদ্যুতের খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখেন ভিলেজ ফ্রেশ ফুড অ্যান্ড এগ্রো কোম্পানির কর্মচারীরা। পরে দুপুর দুইটার দিকে ওই প্রতিষ্ঠানের স্বত্ত্বাধিকারী জিসান হোসেন এসে তাদের ব্যাপক মারধর করে ও মাথার চুল কেটে দেয়। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজনের প্রতিবাদের মুখে জিসান তাদের ছেড়ে দেয়। 

শুক্রবার (৩০ এপ্রিল) দুপুরে মারধরের ব্যাপারটি স্বীকার করে জিসান হোসেন জানান, তার প্রতিষ্ঠান মধুসহ বিভিন্ন খাদ্য সামগ্রী বাজারজাত করেন। খাঁটি মধু সরবরাহের জন্য তার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রায় এক বছর আগে চুক্তিবন্ধ হন আল আমিন ও আলাল। প্রথমে খাঁটি মধু সরবরাহ করলেও কিছুদিন পর থেকেই ভেজাল মধু সরবরাহ করতে থাকেন তারা। গ্রাহকরা এ ভেজাল মধুর বিষয়ে অভিযোগ দিতে থাকেন। বিষয়টি তাদের জানালে নানা তালবাহনা করতে থাকেন। 

পরবর্তীতে ভালো মধু দেয়ার কথা বলে আবারও ভেজাল মধু দেন তারা। তারা প্রায় ৩০০ কেজি মধু সরবরাহ করেছেন। এর মধ্যে ভেজালের কারণে ১২০ কেজি মধু এখনও অবিক্রিত রয়েছে। বৃহস্পতিবার আবারও ভেজাল মধু সরবরাহের জন্য এলে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে এলাকার লোকজন এসে দু’জনকে আটকে রেখে মারধর করেন ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করেন।

জিসান বলেন, “বিকালে আলামিন ও আলালের পরিবারসহ এলাকার গণ্যমান্য লোকজনের উপস্থিতিতে ভেজাল মধুর ক্ষতিপূরণ ও জনসম্মুখে দু’জনকে চড়থাপ্পড় দিয়ে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।”

নির্যাতিত দুই সহোদরের বাবা আলম সরদার বলেন, “তারা আমার ছেলেদের মিথ্যা অপবাদ দিয়ে অন্যায়ভাবে মেরেছে। আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।”

ঈশ্বরদী উপজেলা নির্বাহী অফিসার পিএম ইমরুল কায়েস বলেন, “আমি এ ব্যাপারে অবগত নই।” 

এ বিষয়ে দুপুরে ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আসাদুজ্জামান আসাদের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে দুই যুবক নির্যাতনের খবর এক জানতে পেরেছি। এ বিষয়ে খোঁজ-খবর নেওয়া হচ্ছে।”