করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিংবা নমুনা পরীক্ষা করাতে এসেছেন এমন রোগীদের সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন ‘বৃহন্নলা’ নামে তৃতীয় লিঙ্গের এ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটি
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গেলেই চোখে পড়তে বাধ্য কমলা জ্যাকেটের একদল স্বেচ্ছাসেবী। কোভিড-১৯ ইউনিটে রোগীদের সেবার পাশাপাশি রিকশায় করে রোগীদের গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়া কিংবা অন্য কাজে সাহায্য করছে। গায়ে কমলা জ্যাকেট মুখে মাস্ক, হাতে গ্লাভস পরা এরা কারা জানেন?
১৫ সদস্যের এ স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনটির নাম বৃহন্নলা, তৃতীয় লিঙ্গের স্বেচ্ছাসেবীদের নিয়ে গঠিত এ সংগঠনটির সদস্যরা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত কিংবা করোনাভাইরাস পরীক্ষা করাতে এসেছেন এমন রোগীদের সকাল থেকে রাত পর্যন্ত সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
তৃতীয় লিঙ্গের ১০ সদস্য ও পাঁচজন পুরুষের সমণ্বয়ে গঠিত এ সংগঠনটির কার্যক্রম অত্যন্ত চমকপ্রদ উল্লেখ করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক জানান, রবিবার (২৫ এপ্রিল) স্বেচ্ছাসেবীর সদস্যরা আমার সাথে দেখা করেছিল। এই সংকটকালীন সময়ে তারা গাইড হিসেবে কাজ করছে। তারা আমাদের তত্ত্বাবধানে থাকবে এবং প্রয়োজনে তাদেরকে স্বেচ্ছাসেবী কাজ করার আনুষ্ঠানিক অনুমতি দেওয়া হবে।”
সাগরিকা নামের তৃতীয় লিঙ্গের একজন স্বেচ্ছাসেবী বলেন, “যারা সবচেয়ে অবহেলিত রোগী তাদের জন্য কাজ করতে পেরে আমি গর্বিত। তাদের ভর্তির টিকিট সংগ্রহ করতে, দিকনির্দেশনা দেখাতে এবং কখনও কখনও ওয়ার্ড পর্যন্ত রোগীদের বহন করে নিয়ে যেতে সহায়তা করি।"
বৃহন্নালার প্রধান সাদিকুল ইসলাম জানান, সংগঠনটি চালুর সময় অনেক বাঁধার মুখোমুখি হতে হয়েছে। কিন্তু তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের উন্নয়নের জন্য এ কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বদ্ধ পরিকর তিনি।
রাজধানীর ঝিগাতলা, ধানমন্ডি, আজিমপুর, ফার্মগেট, খিলগাঁও, মিরপুর শনির আখড়া এবং পোস্তগোলা প্রভৃতি অঞ্চল থেকে করোনাভাইরাস আক্রান্ত ও সন্দেহভাজন রোগীদের বিনা পারিশ্রমিকে পরিবহন করেন বৃহন্নলার এসব স্বেচ্ছাসেবীরা।
তবে বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করলেও স্বেচ্ছাসেবীদের হাতখরচ কিংবা যাতায়াত খরচ দেবার চেষ্টা করেন সাদিকুল। সাদিকুল জানান, মহাভারতের শক্তিমান অর্জুন একসময় বৃহন্নলার (তৃতীয় লিঙ্গ) ভূমিকা গ্রহণ করেছিলেন সেজন্যই সংগঠনের নাম রাখা হয়েছে বৃহন্নলা।
মতামত দিন