দরিদ্র হওয়ায় যৌতুক দিতে ব্যর্থ হয় মেয়েটির পরিবার
টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরে যৌতুকের টাকা না দেওয়ায় এক গৃহবধূর (১৮) মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছে তার স্বামী, শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি ও ননদ। শুধু তাই নয়, তাকে শারীরিকভাবে নির্যাতনও করা হয়েছে তাকে। নির্যাতনের শিকার গৃহবধূর বাড়ি উপজেলার বাহাদীপুরে। গত বৃহস্পতিবার (১৫ এপ্রিল) এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, উপজেলার বাহাদীপুর গ্রামের একটি মেয়ের সাথে রাউৎবাড়ী গ্রামের আরশেদের ছয় মাস আগে বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই যৌতুকের টাকার জন্য তার স্বামী, শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি ও ননদ প্রায়ই তাকে মারধর করতো।
এরপর আরশেদ তার স্ত্রীকে নিয়ে গাজীপুরে চলে যায়। সেখানে একটি গার্মেন্টস কারখানায় চাকরি নেয় কে। কিছুদিনপর গাজীপুরে ছেলের বাসায় বেড়াতে যায় আরশেদের মা-বাবা। পরে সেখানেও যৌতুকের জন্য আরশেদের স্ত্রীকে নির্যাতন করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত বৃহস্পতিবার ওই গৃহবধূকে আবারও শারীরিক নির্যাতন ও মাথা ন্যাড়া করে দেয় তার স্বামী ও পরিবারের লোকজন।
নির্যাতনের শিকা গৃহবধূর মা বলেন, বিয়ের পর থেকে যৌতুকের জন্য আমার মেয়েকে বিভিন্ন সময়ে শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি ও আরশেদের বড়বোন মারধর ও নির্যাতন করতো। কিন্তু দরিদ্র থাকায় যৌতুক দিতে না পারায় আরশেদ আমার মেয়েকে নিয়ে গাজীপুর চলে যায়। এর কিছুদিন পর ওর শ্বশুড়-শ্বাশুড়ি ও আরশেদের বড়বোন সেখানে গিয়েও যৌতুকের জন্য মারধর করে। একপর্যায়ে তারা গত বৃহস্পতিবার এপ্রিল আমার মেয়ের মাথা ন্যাড়া করে দেয়।
তিনি আরো বলেন, মাথা ন্যাড়া ও নির্যাতনের বিষয়টি আমার মেয়ে মোবাইল ফোনে আমাকে জানালে তাকে বাড়ি চলে আসতে বলি। পরে বাড়ি আসারপর তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখা দিলে তাকে নিয়ে গত শুক্রবার সকালে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করাই।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মহীউদ্দিন জানান, ‘গৃহবধূর মাথা ন্যাড়া ও বাম-ডান পায়ে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। শনিবার (১৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় চিকিৎসা শেষে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে।”
এ ব্যাপারে ভূঞাপুর থানার ওসি আব্দুল ওহাব বলেন- “মাথা ন্যাড়া ও শারীরিক নির্যাতনের ঘটনাটি গাজীপুরের। তাকে কোর্টে বা গাজীপুর থানায় মামলা করার জন্য পরামর্শ দেয়া হয়েছে।”
মতামত দিন