'আমরা ঘটনার দিনের ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পাই ঘাতক কার্গোটির চালক লঞ্চটি চাপা দিয়ে নদীতে ডুবিয়ে দিচ্ছে। কার্গোটি চাপা দেয়ার পর পরই দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়'
নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যায় লঞ্চ ডুবিতে ৩৪ জনের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ঘাতক কার্গো চালকের খামখেয়ালীপনা ও অবৈধ প্রতিযোগিতাকে দায়ী করে মামলা করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ)।
মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) রাত ১২ টায় নারায়ণগঞ্জ বন্দর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দীপক চন্দ্র সাহা ঢাকা ট্রিবিউনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
মঙ্গলবার রাতে বন্দর থানায় এ ঘটনায় জড়িত অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে নারায়ণগঞ্জ জেলার ভারপ্রাপ্ত উপপরিচালক বাবু লাল বৈদ্য বাদী হয়ে এ মামলাটি করেছেন।
এ ব্যাপারে বাবু লাল বৈদ্য জানান, “আমি নিজেই বাদী হয়ে মামলাটি করেছি। আমরা ঘটনার দিনের ভিডিও ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করে দেখতে পাই ঘাতক কার্গোটির চালক লঞ্চটি চাপা দিয়ে নদীতে ডুবিয়ে দিচ্ছে। কার্গোটি চাপা দেয়ার পর পরই দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে কার্গোটির কোনো হদিস পাওয়া যায়নি। আমরা ধারণা করছি কার্গোটি লঞ্চটিকে চাপা দেয়ার পর ধলেশ্বরী হয়ে মেঘনা নদী দিয়ে বের হয়ে গেছে।”
এর আগে রবিবার (৪ এপ্রিল) সন্ধ্যা ৭টার দিকে সদর উপজেলার চর সৈয়দপুর কয়লা ঘাট ও বন্দর মদনগঞ্জ এলাকার মাঝামাঝি শীতলক্ষ্যায় নির্মাণাধীন সেতুর নিচে একটি কার্গো এসকেএল-৩ (এম: ০১২৬৪৩) ধাক্কায় “এমএল সাবিত আল হাসান” নামের যাত্রীবাহী লঞ্চটি ডুবে যায়। লঞ্চে অনুমানিক ১৫০ জন যাত্রী ছিল। ঘটনার দিনই ৫ নারীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
পরে সোমবার বেলা পৌনে ১টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ৯টি ইউনিটসহ নৌ পুলিশ, বিআইডব্লিউটি’র প্রায় ১৯ ঘণ্টা অভিযান শেষে প্রায় ৩৫ ফুট গভীর থেকে লঞ্চটি উদ্ধার করা হয়। এ সময় লঞ্চের ভেতর থেকে শিশুসহ ২১ জনের লাশ ও পরবর্তীতে আরো ৩ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়।
সর্বশেষ মঙ্গলবার সকালে আরো ৫টি লাশ উদ্ধার করা হয়। এখন পর্যন্ত মোট ৩৪ টি লাশ উদ্ধার হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে ইউএনও নাহিদা বারিক।
লাশগুলো পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। নিহতদের প্রতিটি পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনুদান দেয়া হয়েছে।
এদিকে লঞ্চ ডুবির ঘটনায় এখন পর্যন্ত পৃথক পৃথক ৪ টি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। আগামী ৮ এপ্রিল এ ঘটনায় গণশুনানীর ঘোষণা দিয়েছেন নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব ও তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক আব্দুর সাত্তার শেখ।
মতামত দিন