জনগণের স্বাস্থ্য সচেতনায় এমন উদাসীনতা আশঙ্কাজনক মনে করে বিশেষজ্ঞরা বলেন, এভাবে শিথিলভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন দেশের সাম্প্রতিক করোনভাইরাস উত্থানকে রোধ করতে তেমন সহায়তা করবে না
সোমবার থেকে শুরু হওয়া সপ্তাহব্যাপী লকডাউনের দ্বিতীয় দিন পার হওয়া সত্ত্বেও সরকার আরোপিত নিষেধাজ্ঞা লঙ্ঘন করে যাচ্ছে সবাই।
রাজধানীর অনেক এলাকায়ই দোকানপাট খোলার পাশাপাশি রোজগারের সন্ধানে বাইরে বেরিয়েছে কর্মজীবী মানুষ।এমনকি কয়েকটি জায়গায় আগের মতই যানবাহনের ভিড়ও চোখে পড়েছে।
প্রচুর সংখ্যাক মুদি দোকানও খোলা দেখা গেছে। অনেক দোকানদার এবং বিক্রেতাই মাস্ক পর্যন্ত পরেননি। এমনকি কিছু গ্রাহককেও মাস্ক ছাড়াই বাইরে দেখা গেছে।
চায়ের দোকানে বসে আড্ডা দিতেও দেখা গেছে অনেক এলাকায়। এছাড়া খাবারের দোকানে বসে খাওয়া এবং মাস্ক না পরে ধুমপান করতেও দেখা গেছে।
প্রচণ্ড গরম আবহাওয়ার মধ্যেও নিত্য প্রয়োজনীয় বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করতে রাস্তায় প্রচুর হকার এবং ফুটপাতের বিক্রেতারাদেরও দেখা মিলেছে।
গণপরিবহন চলাচল বন্ধ করা হলেও মঙ্গলবার (৬ এপ্রিল) লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে রাজধানীর রাস্তায় ব্যক্তিগত যানবাহন এবং রিকশা ও অটোরিকশার নিয়ন্ত্রণে ছিল।
এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় কোনো রকম ক্রেতার চাপ ছাড়াই খোলা ছিল কাঁচা বাজারগুলো। তবে সরকারি নির্দেশনা মেনে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বন্ধ ছিল শপিংমলগুলো।
মজার বিষয় হচ্ছে, মহানগরের মোবাইল কোর্টের অভিযান ছাড়া স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নিয়মাবলী মেনে চলার জন্য খুব কমই ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে
বাড্ডার মুদি দোকানদার সাগর মিয়া বলেন, "আমি গত বছরের মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে আর চাই না।"
সাগর মিয়া আরও বলেন, “২০২০ সালের অনির্দিষ্টকালের সাধারণ ছুটির সময় আমাদের অনাহারে থাকতে হয়েছিল। সুতরাং এ বছর আমরা তেমন কিছু হোক চাই না। সবকিছু এখন স্বাভাবিকই মনে হচ্ছে। আমি সবসময় আমার দোকানে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নির্দেশনা বজায় রাখি।"
এদিকে, লকডাউন চলাকালীন শপিংমল বন্ধের প্রতিবাদ করে নিউমার্কেট এবং সংলগ্ন শপিংমলগুলোর দোকান মালিকরা এবং কর্মীরা টানা তৃতীয় দিনের মত বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন। এ সময় দোকানমালিকরা লকডাউনের মধ্যে প্রতিদিন চার ঘণ্টা দোকান খোলা রাখার দাবিতে বিক্ষোভ করেন।
এদিকে জনগণের স্বাস্থ্য সচেতনায় এমন উদাসীনতা আশঙ্কাজনক মনে করে বিশেষজ্ঞরা বলেন, এভাবে শিথিলভাবে লকডাউন বাস্তবায়ন দেশের সাম্প্রতিক করোনভাইরাস উত্থানকে রোধ করতে তেমন সহায়তা করবে না।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা বিদ্যুৎ বরুন ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, সাধারণত কর্তৃপক্ষ জনগণের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করতে ব্যর্থ হলে লকডাউন ঘোষণা করা হয়।
“এই লকডাউনটি হয়ত সংক্রমণের হার কমিয়েও আনতে পারবে। তবে প্রত্যেক নাগরিক স্বাস্থ্য সুরক্ষার নিয়ম অনুসরণ করছে কি না তা নিশ্চিত করতে না পারলে লকডাউন দেওয়া ব্যর্থ হয়ে যাবে।"
মতামত দিন