চাকরি প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীদের অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে চাকরি দেওয়ার নামে কৌশলে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে আটক করে রাখে
রাজশাহীতে চাকরি দেওয়ার নামে ৩৭ যুবক-যুবতীকে আটকে রেখে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠেছে এক ভুয়া এমএলএম কোম্পানির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
রবিবার (২১ মার্চ) রাজশাহী মহানগর পুলিশ রাতভর অভিযান পরিচালনা করে ভুয়া এমএলএম কোম্পানির বন্দিদশা থেকে ৩৭ জন চাকরি প্রত্যাশীকে উদ্ধার করে।
গ্রেফতার চারজন হলেন- রাজশাহীর পুঠিয়া মেছপাড়া জিউপাড়া গ্রামের মোহাইমিনুল হক মিনু (২৪) ও তার স্ত্রী শিলা বেগম (২০), নাটোরের সদর থানার জালালাবাদ গ্রামের শিমুর হোসেন (১৯) এবং রাজশাহী মহানগরীর বোয়ালিয়া মডেল থানার যষ্ঠিতলা গ্রামের রাকেশ দাস (৩০)।
সোমবার (২২ মার্চ) বিকালে রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র ও অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, সম্প্রতি মাল্টি লেভেল মার্কেটিং (এমএলএম) বা ডিরেক্ট সেলস ব্যবসার ধরন পাল্টিয়ে প্রতারণা করে যাচ্ছে কিছু কোম্পানি। অত্যন্ত লোভনীয়, অকল্পনীয় অফারের প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষকে আকৃষ্ট করছে তারা। এদের প্রতারণার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছে দেশের চাকরি প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীরা।
রাজশাহীতে এমনই একটি এমএলএম কোম্পানি “বেস্ট ওয়ান মার্কেটিং এজেন্সীর” প্রতারণার ফাঁদে পড়েছে চাকরি প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীরা।
ভুক্তভোগীদের বরাদ দিয়ে অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (সদর) মো. গোলাম রুহুল কুদ্দুস জানান, রাজশাহী মহানগরীতে বেস্ট ওয়ান মার্কেটিং এজেন্সী (এমএলএম) কোম্পানি চাকরি প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীদের থেকে সিভির জন্য ৫৬০ টাকা এবং কোম্পানিতে যোগদানের জন্য এককালীন ৩৬ হাজার টাকা নেয়। যার মধ্যে থাকা-খাওয়ার জন্য ১৮ হাজার টাকা এবং পণ্য সামগ্রী ১৮ হাজার টাকা ধরা হয়েছে।
কোম্পানি প্রতি জনের জন্য ব্যয় করে ১৩ হাজার ৫০০ টাকা। যার মধ্যে ৮ হাজার টাকা মূল্যের এলইডি মনিটর এবং ৫ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের একটি মোবাইল ফোনসেট কেনা হয়। ফলে কোম্পানি প্রতি জনের নিকট হতে প্রতারণার মাধ্যমে ৪ হাজার ৫০০ টাকা হাতিয়ে নেয়।
এছাড়া কোম্পানির কতিপয় সদস্যরা নগরীর দক্ষিণ দড়িখড়বোনা এলাকায় চাকরি প্রত্যাশী বেকার যুবক-যুবতীদের বেকারত্বের অসহায়ত্বকে কাজে লাগিয়ে কাজ দেওয়ার নামে কৌশলে প্রতারণামূলকভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তাদের আটক করে রাখে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের অক্টোবরে প্রণয়ন করা মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কার্যক্রম (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে করা হয় বিধিমালা, যা আবার সংশোধন করা হয় একই বছরের ২২ জুলাই।
আইন অনুযায়ী লাইসেন্স ছাড়া এমএলএম ব্যবসা করা যায় না। সরকারের অনুমোদন ছাড়া লাইসেন্স হস্তান্তর করতেও নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। যে সমস্ত কোম্পানি ব্যবসা করছে এদের বেশিরভাগই বৈধ অনুমোদন নেই, অফিস নেই এবং দেশের প্রচলিত ব্যবসার সাথে কোনো মিলও নেই বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
মতামত দিন