সোমবার দুপুরে নিহত বাংলাদেশি যুবক বাপ্পার লাশ নিয়ে সীমান্তে অপেক্ষা করে বিএসএফ। কিন্তু লাশ নিতে বিজিবির কেউ সেখানে যাননি। পরে বিএসএফ সদস্যরা ফিরে যান
মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত বাংলাদেশি যুবক আব্দুল মুমিন বাপ্পার লাশ ৩ দিনেও ফেরত আসেনি। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী সোমবার (২২ মার্চ) দুপুরে স্থানীয় ফুলতলা বিজিবি ক্যাম্প ঘেরাও করে বিক্ষোভ করেছেন।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গত শনিবার (২০ মার্চ) ভোরের দিকে উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের পূর্ব বটুলী সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে নিহত হয় বাংলাদেশি যুবক আব্দুল মুমিন বাপ্পা। বাপ্পা নিহত হবার পরদিনই তার বাবা আবদুল রউফ লাশ ফেরত চেয়ে বিজিবির কাছে লিখিত আবেদন করেন।
পরদিন রবিবার (২১ মার্চ) দুপুরে সীমান্তে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে লাশ ফেরত নিতে বিজিবিকে চিঠি দেয় বিএসএফ। তবে লাশ নেওয়ার বিষয়টি বিএসএফকে পরে জানানো হবে বলে পতাকা বৈঠক শেষ করে ফিরে আসেন বিজিবি কর্মকর্তারা।
বৈঠকে উপস্থিত থাকা ভারতের কদমতলা থানার ওসি কৃষ্ণধন সরকার জানান, বিজিবিকে লাশ গ্রহণ করার জন্য বলা হয়েছিল। বিজিবি জানায়, লাশ ফেরত নেওয়ার সিদ্ধান্ত তারা পরে জানাবে। তবে সোমবার দুপুরে নিহত বাংলাদেশি যুবক বাপ্পার লাশ নিয়ে সীমান্তে অপেক্ষা করে বিএসএফ। কিন্তু লাশ নিতে বিজিবির কেউ সেখানে যাননি। পরে বিএসএফ সদস্যরা ফিরে যান।
পরিচয় প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বিজিবি সদস্য জানান, ২০ মার্চ সকাল ১১টায় লাশ ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ভারতের কদমতলা পুলিশের তত্ত্বাবধানে ধর্মনগর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে ময়নাতদন্ত শেষে লাশটি হাসপাতালের হিমঘরেই রাখা হয়। পরে সোমবার দুপুরে বিএসএফ একটি গাড়িতে করে বাপ্পার লাশ সীমান্তের শূন্যরেখায় নিয়ে আসে এবং ফেরত দেবার জন্য প্রায় একঘণ্টা অপেক্ষা করে।
এদিকে, বিএসএফ লাশ ফেরত দিতে আসার বিষয়টি স্থানীয়দের নজরে আসে। কিন্তু লাশ ফেরত আনার বিষয়ে বিজিবি কোনো পদক্ষেপ না নেওয়ায় স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার করে। পরে গ্রামবাসী একত্রিত হয়ে ফুলতলা বিজিবি ক্যাম্প ঘেরাও করেন এবং লাশ ফেরত আনার দাবি জানান।
বিষয়টি জানতে মুঠোফোনে বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (সিইও) শাহ আলম সিদ্দিকী এবং ফুলতলা ক্যাম্পের কমান্ডার দেলওয়ার হোসেনের মোবাইল ফোনে বার বার কল করা হলেও কারও কলই রিসিভ হয়নি।
এছাড়া বিজিবির একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তারা কেউ এ বিষয়টি নিয়ে বক্তব্য দিতে রাজি হননি।
মতামত দিন