মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক আবদুল মালেক হাওলাদারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রস্তুতি চলছে
বরিশালে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বিভাগীয় অফিসে পরিদর্শকের কার্যালয়ে এক তরুণকে নির্যাতনের পর স্বীকারোক্তি আদায় করাতে না পেরে তার হাতে ইয়াবা তুলে দেওয়ার অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে পরিদর্শক আবদুল মালেক হাওলাদারের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরসহ শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করার প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত দলের প্রধান, বিভাগীয় কার্যালয়ের অতিরিক্ত পরিচালক পরিতোষ কুমার কুন্ডু।
পরিতোষ চন্দ্র কুন্ডু জানান, “বিভাগীয় কার্যালয়ের নীচ তলায় পরিদর্শকের কক্ষে গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর এক আসামিকে আটক করে মালেক হাওলাদারের লাঠি দিয়ে পেটানোর ভিডিও দুই-এক দিন আগে ভাইরাল হয়। আমরা তদন্ত করে এর সত্যতা পেয়েছি। আর হাতে ইয়াবা দেয়ার বিষয়টি ওই তরুণ অভিযোগে জানিয়েছে। তার সাথে অধিদপ্তরের মহাপরিচালকও কথা বলবেন। আমরা প্রাথমিকভাবে নির্যাতনের যে সত্যতা পেয়েছি সেটি উচ্চ মহলে জানিয়েছি। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলাসহ শান্তিমূলক ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।”
তিনি আরও বলেন, “এটা পাঁচ মাস আগের ঘটনা। হয়তো মালেকের কাছের কেউ এটা (ভিডিও) ধারণ করেছে। আমরা কে ধারণ করেছে এই বিষয়টি তদন্ত করছি না। তবে নির্যাতনের বিষয়টির সত্যতা পেয়েছি। ইয়াবার বিষয়ে তদন্ত চলমান। এই ঘটনায় মারুফ ১৯ দিন জেল হাজতে থাকার পর জামিনে রয়েছে। তবে মাদক মামলায় এখন আদালতে বিচারধীন অবস্থায় শেষ পর্যায়ে রয়েছে।”
এদিকে নির্যাতনের শিকার বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের ১ নম্বর ওয়ার্ডের বিসিক রোডের বাসিন্দা মারুফ সিকদার জানান, "২২ সেপ্টেম্বর বিসিক শাহাবুদ্দিন বেতারী সংলগ্ন স্থান থেকে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে মালেক তাকে তুলে আনেন। পরে অফিসে নিয়ে স্বীকারোক্তির আদায়ের জন্য হাতকড়া পরা অবস্থায় লাঠি পেটা করেন। স্বীকারোক্তির আদায়ে ব্যর্থ হয়ে পাঁচ পিস ইয়াবা দিয়ে তাকে থানায় চালান দেয়া হয়।"
এদিকে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের বিভাগীয় অফিস সূত্র জানায়, মারুফকে মারধরের বিষয়টি সত্য। মারুফের বিরুদ্ধে আরও দু’টি মামলা রয়েছে। স্থানীয়রা ও পারিবারির সূত্র মাদকের সঙ্গে মারুফের সম্পৃক্ততা অস্বীকার করেছে।
মামলার বিষয়ে মারুফ দাবি করেন, "একটি মামলায় তাকে সন্দেহভাজন হিসেবে পুলিশ ২০১৮ সালে আটক করেছিল। এছাড়া গাঁজা উদ্ধারের আরেকটি ঘটনার সময় তিনি ঘটনাস্থলে থাকায় তাকে পুলিশ গ্রেফতার করে। এগুলোর সঙ্গে তার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।"
যার বিরুদ্ধে অভিযোগ, সেই মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের বরিশাল জেলা কার্যালয়ের পরিদর্শক আবদুল মালেক হাওলাদার জানান, মাদক মামলায় মারুফকে শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল। তার কাছ থেকেই ইয়াবা উদ্ধার করা হয়েছিল। তার হাতে ইয়াবা তুলে দেয়ার বিষয়টি মিথ্যা। কেউ গোপনে ভিডিও করে এডিট করে এটি সরবরাহ করেছে।
মতামত দিন