গত পাঁচ বছরে ৩৩ লাখ পঞ্চাশ হাজার টাকা ব্যয়ে আড়াই কিলোমিটার সড়ক কৃষকের অর্থে পাকা হয়েছে
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর সরকারি সহায়তা না পেয়ে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে কৃষকদের টাকায় প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বৃহস্পতিবার (৪ মার্চ) থেকে সড়ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে।
স্থানীয় কৃষকরা জানান, জগন্নাথপুর পৌরসভার ৭, ৮ ও ৯নং ওয়ার্ডের ইকড়ছই, ছিলিমপুর, বলবল, ভবানীপুর, শেরপুর-যাত্রাপাশা, খালিকনগরসহ উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের প্রায় কয়েক হাজার কৃষক শেরপুর-হরতাজপুর সড়ক দিয়ে নলুয়া হাওরের বোরো ফসল ওঠান। বোরো মৌসুমকালে মাঠের পাকা ফসল তোলার সময় সড়কটি কাদাযুক্ত হয়ে পড়ে। এতে করে যাতায়াতে চরম ভোগান্তিতে পড়েন কৃষকরা। এলাকাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও সড়ক নির্মাণে কেউ কোনো উদ্যোগ নেয়নি কেউ। বাধ্য হয়ে কৃষকরা নিজেদের অর্থ দিয়ে সড়ক পাকাকরণ কাজ শুরু করেন।
পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এ সড়কে ২০১৭ সালে তিন লাখ ৫০ হাজার টাকা ব্যয়ে ৩০০ ফুট পাকাকরণ কাজ হয়, ২০১৮ সালে ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০০ ফুট, ২০১৯ সালে সাড়ে ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৭০০ ফুট, ২০২০ সালে ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে এক কিলোমিটার ও চলতি বছর সাড়ে ৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ৬০০ ফুট নির্মাণের কাজ করা হচ্ছে।
পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর শেরপুর এলাকার বাসিন্দা লুৎফুর রহমান জানান, এ সড়ক দিয়ে নলয়ার হাওরের উল্লেখযোগ্য পরিমাণ বোরো জমির ধান উত্তোলন হয়। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কটি কাদাযুক্ত হয়ে সব ধরনের যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে।
তিনি বলেন, “২০১৯ সালের তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সড়কের কাজ পরিদর্শন করে এ বছর কমপক্ষে এক কিলোমিটার কাজ করার ঘোষণা দেন। কিন্তু পরে তা বাস্তবায়ন হয়নি।”
যাত্রাপাশার কৃষক বকুল গোপ বলেন, গুরুত্বপূর্ণ এ সড়কটি পাকা না থাকায় প্রতি বছর বৈশাখ মাসে ধান তুলতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহাতে হয়। যে কারণে অনেক কৃষক জমি অনাবাদি রেখেছেন।
কাউন্সিলর ছমির উদ্দিন বলেন, “হাওরের ফসল ওঠার পর বর্ষাকালে ডুবে যাওয়া কৃষকের জমি ফিসারির জন্য স্থানীয় কৃষকদের লিজ দেয়া হয়। আর ওই লিজের টাকায় প্রতিবছর সড়কে অল্প অল্প করে পাকা করা হচ্ছে। গত পাঁচ বছরে প্রায় আড়াই কিলোমিটার সড়ক কৃষকের অর্থে পাকা হয়েছে। এভাবে কাজ হলে কবে শেষ হবে তা বলা যাচ্ছে না।”
স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) জগন্নাথপুর উপজেলা কার্যালয়ের প্রকৌশলী গোলাম সারোয়ার বলেন, “সড়কটি পৌরসভার অংশে রয়েছে। এটি এলজিইডির আওতাবিহীন সড়ক। তবে সড়কটি গেজেট হলে আমরা নির্মাণ করতে পারব।”
জগন্নাথপুর পৌরসভার মেয়র আক্তারুজ্জামান বলেন, “সড়কটি পৌরসভার আওতাধীন কিনা বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখব। সংশ্লিষ্টদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে উদ্যোগ নেব আমরা।”
মতামত দিন