২০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে ১৭ হাজার টাকা পরিশোধ করেছিলেন লিপিকা। কিন্তু বাকী টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় তাকে পুলিশ দিয়ে হয়রানি ও এনজিও থেকে মামলার হুমকি দেয়া হয়েছিল
যশোর জেলার মণিরামপুরে এনজিও’র ঋণের কিস্তির টাকা আদায়ের চাপ সইতে না পেরে লিপিকা মন্ডল (২৫) নামের এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
গত মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যার দিকে নিজ ঘরের আড়ার সাথে গলায় রশি দিয়ে লিপিকা মন্ডল আত্মহত্যা করেন। তিনি উপজেলার হরিদাসকাটি ইউনিয়নের পাঁচকাটিয়া গ্রামের বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ভ্যান চালক সুশান্ত মন্ডলের স্ত্রী।
পুলিশ লিপিকা মন্ডলের লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
ঘটনার বিবরণ সম্পর্কে স্থানীয় ইউপি মেম্বার স্বপন বিশ্বাস জানান, "মৃত লিপিকা মন্ডলের রোজগারেই বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্বামী সুশান্ত মন্ডলের সংসার চলতো। তিনিই ছিলেন সংসারের এক প্রকার অভিভাবক। তাদের সংসারে মাধুর্য্য মন্ডল নামের ১০ বছরের একটি পুত্র সন্তান রয়েছে। স্বামীর পাশাপাশি তার শাশুড়িও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। ওই গৃহবধূ কর্মসৃজন প্রকল্পে রাস্তার মাটি কাটার পাশাপাশি অন্যের ক্ষেতে মজুরির কাজ করতেন।"
তিনি আরো জানান, "গৃহবধূ লিপিকা মন্ডল ৭/৮টি এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী স্বামীর ইঞ্জিন ভ্যান কিনে দেয়াসহ সংসারের কাজে খরচ করেছেন। এ কারণে এনজিও’র কিস্তির টাকা দিতে ব্যর্থ হন লিপিকা মন্ডল।"
“নবলোক” নামের এক এনজিও’র মণিরামপুর উপজেলার শাখা অফিস থেকে বছর খানেক আগে লিপিকা মন্ডল ২০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে ১৭ হাজার টাকা পরিশোধ করেছেন। বাকি টাকা আদায়ের জন্য তার উপর চাপ সৃষ্টিসহ মামলা করে পুলিশ দিয়ে হয়রানি ও আটকের হুমকি দেয়া হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।
অবশ্য নবলোক এনজিও’র মাঠ কর্মী এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। এনজিও’র শাখা ব্যবস্থাপক আব্দুল কুদ্দুস জানান, তাদের ঋণ গ্রহীতা লিপিকা মন্ডলের আত্মহত্যার খবর তিনি শোনেননি। মাঠকর্মী মাহাবুবুর রহমান তাকে চাপসৃষ্টি অথবা হুমকি দিয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে নিজ ঘরে লিপিকা মন্ডল এর মরদেহ ঝুলতে দেখে পুলিশকে জানায় স্থানীয়রা।
বিষয়টি ঢাকা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন মণিরামপুর থানার এসআই হাসানুজ্জামান।
মতামত দিন