'বইয়ের স্টলের নকশা মার্চ ও এপ্রিল মাসের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিবেচনায় রেখেই করা হবে'
বিশ্বের দীর্ঘকালীন গ্রন্থমেলা অমর একুশে গ্রন্থমেলা ১৮ মার্চ থেকে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত আয়োজনের সিদ্ধান্তটি সমালোচনার মুখে পড়েছে।
কেননা, প্রকাশক ও লেখকদের শঙ্কা সেই সময় প্রাক-মৌসুমী বৃষ্টিপাতে পণ্ড হতে পারে বইমেলা। এই প্রাক-মৌসুমী বৃষ্টিপাত বাংলাদেশে খুবই স্বাভাবিক একটি অবস্থা যা কিনা বার্ষিক বৃষ্টিপাতের প্রায় ৭২%।
Weathertovisit.com অনুসারে, ঢাকায় বছরের পঞ্চম শুষ্কতম মাস হলো মার্চ। শহরটিতে প্রতি মার্চ মাসে গড়ে প্রায় ৫৪ মিমি বৃষ্টিপাত হয়। এই বর্ষণ সাধারণত তিন দিনের বেশিও চলতে থাকে।
অন্যদিকে, এপ্রিল ঢাকায় বছরের ষষ্ঠ শুষ্কতম মাস। প্রতি এপ্রিলে শহরে গড়ে প্রায় ১৩৮ মিমি বৃষ্টিপাত হয়। এবং এই বর্ষণ কখনও কখনও সাত দিনের বেশিও চলতে থাকে।
গত দুই বছরেও যখন ফেব্রুয়ারিতে মাসব্যাপী মেলাটির আয়োজন করা হয় তখন স্টল মালিকরা ভারী প্রাক-মৌসুমী বর্ষণ এবং ঝড়ের কারণে প্রচুর লোকসানের শিকার হন।
আবহাওয়ার একটি প্রতিবেদন অনুসারে, চলতি বছরের মার্চ এবং এপ্রিল মাসে ভারী বৃষ্টি হতে পারে।
শ্রাবণ প্রকাশনীর প্রকাশক রবিন আহসান বলেন, মার্চ-এপ্রিল মাসে বইমেলার আয়োজনের সিদ্ধান্তটি মোটেই সুবিবেচিত ছিল না।
তিনি বলেন, "প্রাক-মৌসুমী বর্ষণ মেলায় বই বিক্রিতে আঘাত হানবে। ইতোমধ্যে প্রকাশক এবং বইয়ের স্টল মালিকরা ক্ষতির মধ্যে পড়ছেন।"
ইতোমধ্যে এ বছরের বইমেলা পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস এবং ২১ ফেব্রুয়ারির মতো বিশেষ দিনগুলো হারিয়েছে যেদিন অধিক পরিমাণে বই বিক্রি হয়।
বইমেলার নিয়মিত দর্শনার্থী, নাট্যকর্মী গোলাপ হোসেনও একই রকম অনুভূতি প্রকাশ করেছিলেন।
"এ বছর এটি কেবলমাত্র বাণিজ্যিক বাণিজ্য মেলা হবে। তদুপরি, প্রাক-মৌসুমী বর্ষণ মানুষকে মেলায় ঘুরতে নিরুৎসাহিত করবে।"
তবে আয়োজকরা বলছেন বইমেলা সফল করতে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
মেলা আয়োজক কমিটির সদস্য সচিব জালাল আহমেদ বলেছেন, "প্রকাশকদের ক্ষয়ক্ষতি কমাতে আমরা আরও বেশি সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করব।"
তিনি বলেন, "বইয়ের স্টলের নকশা মার্চ ও এপ্রিল মাসের প্রাকৃতিক দুর্যোগ বিবেচনায় রেখেই করা হবে।"
জালাল বলেন, তারা বড় ধরণের ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে বিমা কভারেজ দেওয়ার জন্য প্রকাশকদের কাছ থেকে ইতোমধ্যে প্রাসঙ্গিক দলিল নিয়েছেন।
"স্টল মালিকরা বিমা সংস্থার কাছ থেকে ক্ষতিপূরণ দাবি করতে পারেন। কারণ একুশে বইমেলায় তাদের আগের বছরের মতো বিমা কভারেজ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।"
এর আগে ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর কার্যনির্বাহী কাউন্সিলের সভায় আয়োজক কমিটি কোভিড-১৯ মহামারির জন্য বইমেলা স্থগিতের সিদ্ধান্ত নেয়।
মতামত দিন