শিশু দুটি এখনও ঠিকমতো জানে না তাদের বাবা কোথায় আছে, কি হয়েছে তার
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন হত্যাকাণ্ডের বিচার ও ঘাতকদের ফাঁসির দাবিতে বুধবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকালে মহানগরীর কুমিল্লা-সোয়াগাজী বাইপাস সড়কের শামবক্সী এলাকায় মানববন্ধনে কয়েক শত মানুষ অংশগ্রহণ করে।
মানববন্ধন শেষে দেলোয়ার হত্যাকান্ডের মূল পরিকল্পনাকারী কাউন্সিলর আবদুস সাত্তার ও ভাড়াটিয়া খুনি রেজাউলের বিচার ফাঁসির দাবিতে সড়কে বিক্ষুব্ধ জনতা বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
মানববন্ধনে বিচার চেয়ে বক্তব্য দেন নিহত দেলোয়ারের স্ত্রী জিলকজের নেছা, শিশু সন্তান রাইয়ান (৭) ও সাফোয়ান (৪), বড় ভাই শাহাদাত হোসেন নয়ন এবং স্থানীয় বাসিন্দা প্রকৌশলী জাকির হোসেন। উপস্থিত ছিলেন এলাকার বিভিন্ন পেশার কয়েক শত মানুষ।
বাবা হত্যার বিচার ও ঘাতকদের শাস্তির দাবিতে সড়কে ফেস্টুন নিয়ে দাঁড়ায় দুই অবুঝ শিশু রাইয়ান ও সাফোয়ান। শিশু দুটি এখনও ঠিকমতো জানে না তাদের বাবা কোথায় আছে, কি হয়েছে তার।
জানা যায়, ২০১৮ সালের ২৬ নভেম্বর রাতে বাড়ি ফেরার পথে শামবক্সি (ভল্লবপুর) সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে পৌঁছলে সন্ত্রাসীরা মোটরসাইকেলে এসে ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ারকে মাথায় গুলি করে হত্যা করে। ঘটনার পরদিন নিহতের বড় ভাই শাহাদাত হোসেন নয়ন বাদী হয়ে একই গ্রামের রেজাউল করিম ও কাউছারসহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করেন। সদর দক্ষিণ মডেল থানার পর বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে পিবিআই কুমিল্লা। গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর পিবিআইয়ের সদস্যরা দেলোয়ার হত্যাকাণ্ডের কিলিং মিশনে অংশ নেয়া নোয়াগ্রাম গ্রামের সফিকুর রহমান রহমানের ছেলে আনোয়ার হোসেনকে গ্রেফতার করে। আনোয়ার আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে দেলোয়ার হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে।
তিনি জানান, "দেলোয়ার হোসেন হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী কাউন্সিলর আবদুস সাত্তার। এলাকার আধিপত্য বিস্তার ও রাজনৈতিক দ্বন্দ্বের জের ধরে কাউন্সিলর সাত্তারের পরিকল্পনায় দেলোয়ারকে খুন করা হয়েছে। খুনের পরিকল্পনা হয় কাউন্সিলর সাত্তারের কার্যালয়ে।"
আরও জানা যায়, গত ২৬ জানুয়ারি রাজধানীর শাহবাগ এলাকা থেকে নগরীর ২৬ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর সাত্তারকে নগরীর চৌয়ারা এলাকায় হত্যাকাণ্ডে যুবলীগ নেতা জিল্লুর রহমান জিলানীকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার করে পিবিআই। সাত্তার ওই মামলার দুই নম্বর আসামি।
জিল্লুর হত্যা মামলায় ৩ দিনের রিমান্ড শেষে কাউন্সিলর আবদুস সাত্তার বর্তমানে কারাগারে রয়েছে। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি কাউন্সিলর আবদুস সাত্তারকে এই ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখানোর আবেদন করেন পিবিআই।
কুমিল্লার ৯ নম্বর আমলি আদালতে ওই আবেদন করেন দেলোয়ার হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই কুমিল্লার পরিদর্শক মো. মতিউর রহমান।
বৃহস্পতিবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে আদালতে শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।
মতামত দিন