অভিযানে ১৯৭ বস্তায় ১ কোটি ৯৭ লাখ মিটার কারেন্টজাল ও বিপুল পরিমাণ ববিন জব্দ করা হয়েছে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫৯ কোটি ১০ লাখ টাকা
মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার মালিকানাধীনসহ জাল তৈরির তিনটি কারখানা থেকে অবৈধ কারেন্টজাল ও ববিন জব্দ করেছে কোস্টগার্ড পুলিশ।
মঙ্গলবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) ভোরে উপজেলার গোসাইবাগ পান্না সিনেমা হলের পেছনে চেয়ারম্যানের মালিকানাধীন কারেন্ট জাল আয়রনের কারখানা সাওবান ফাইবার ইন্ডাস্ট্রি, তন্ময় ফিশিং নেট ও কারেন্টজাল উৎপাদনকারী রানা মুন্সী নামের কারখানাতে এই অভিযান পরিচালনা করা হয়।
অভিযানে ১৯৭ বস্তায় ১ কোটি ৯৭ লাখ মিটার কারেন্টজাল ও বিপুল পরিমাণ ববিন জব্দ করা হয়েছে যার আনুমানিক মূল্য প্রায় ৫৯ কোটি ১০ লাখ টাকা।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ইলিয়াস শিকদার, জেলা মৎস্য অফিসার আব্দুল আলীম, পাগলা কোস্টগার্ড স্টেশনের চিফ পেটি অফিসার সানোয়ার হোসেন, সদর উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা টিপু সুলতানসহ প্রমুখ।
অভিযানে কারখানার দারোয়ান ও রশি তৈরি শ্রমিকসহ দুইজনকে আটক করা হয়। তবে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা না পাওয়ায় পরবর্তীতে তাদের ছেড়ে দেয়া হয়।
কোস্টগার্ড পুলিশ সূত্রে জানা যায়, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে স্টেশন কমান্ডার পাগলা লেফটেন্যান্ট এম আশমাদুল এর নেতৃত্বে মঙ্গলবার ভোরে অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে ফ্যাক্টরিতে কাউকে উপস্থিত না পাওয়ায় কোনো অপরাধীকে আটক করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে জব্দকৃত জাল আগুনে পুড়িয়ে ধ্বংস করা হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাগলা কোস্টগার্ডের এক কর্মকর্তা জানান, "আমরা জানতে পারি যে রাতে জালগুলো কারখানায় আনা হবে। পরে আমরা টিম নিয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার এলাকার তিনটি কারখানায় অভিযান পরিচালনা করি। এলাকাবাসী সূত্রে জানতে পারি কারখানাগুলো স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানের মালিকানাধীন। তবে তার সাথে আমরা এখন পর্যন্ত কোনোপ্রকার যোগাযোগ করতে পারিনি।"
এ ব্যাপারে মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম মোস্তফার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকা ট্রিবিউনকে জানান, "আমি গত ১০ বছর আগে কারখানা ভাড়া দিয়ে ঢাকায় স্থায়ীভাবে বসবাস করি। এখান থেকে গিয়ে শুধু পরিষদটা চালাই। আমি এর বিস্তারিত কিছুই এখনও জানি না। আমি জেনে আপনাকে জানাচ্ছি।"
এদিকে অভিযানে নেতৃত্ব দেয়া পাগলা কোস্টগার্ড স্টেশনের স্টেশন কমান্ডার লেফটেন্যান্ট আশমাদুল বলেন, "গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তিনটি কারখানায় অভিযান চালানো হয়। অভিযানে তিনটি কারখানা থেকে বিপুল পরিমানের কারেন্টজাল ও ববিন জব্দ করা হয়। এ বিষয়ে আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।"
বাংলাদেশ কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার আমিরুল হক বলেন, "বাংলাদেশ কোস্ট গার্ডের আওতাভুক্ত এলাকা সমূহে আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ, জননিরাপত্তার পাশাপাশি বনদস্যুতা, ডাকাতি দমন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও অবৈধ কারেন্ট জাল দিয়ে মৎস্য ধরা রোধে কোস্ট গার্ডের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।"
মতামত দিন