রায় ঘোষণার পরেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা কাঠগড়ায় দাঁড়ানো অবস্থায় বিচারককে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল গালগাল করেন এবং একইসঙ্গে বিচারকের সামনের কাঁচের গ্লাস ভাংচুর করেন
কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ি ইউনিয়নের দিয়াডাঙ্গা গ্রামে বহুল আলোচিত চার খুনের মামলায় ৬ আসামিকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। মঙ্গলবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) কুড়িগ্রাম জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল মান্নান জনাকীর্ণ আদালতে এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় ঘোষণার পরেই মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা কাঠগড়ায় দাঁড়ানো অবস্থায় বিচারককে উদ্দেশ্য করে অশ্লীল গালগাল করেন এবং একইসঙ্গে বিচারকের সামনের কাঁচের গ্লাস ভাংচুর করেন। পরে পুলিশ দ্রুত আসামিদের আদালত থেকে হাজতখানায় নিয়ে যায়।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৪ সালের ১৪ জানুয়ারি ভুরুঙ্গামারী উপজেলার দিয়াডাঙ্গা গ্রামের সুলতান মিয়ার বাড়িতে একদল মুখোশধারী গভীর রাতে প্রবেশ করে সুলতান মন্ডল, তার নাতনী রোমানা, আনিকা ও স্ত্রী হাজেরাকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এ ঘটনায় পরদিন নিহত সুলতানের ছেলে হাফিজুর রহমান ভুরুঙ্গামারী থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
আসামি মমতাজ উদ্দিনের সাথে ছোট ভাই নিহত সুলতান আহমেদের বিরোধ ছিল। মমতাজ উদ্দিন সুলতান আহমেদকে হত্যার জন্য বাকী দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ৫ লাখ টাকা ও এক বিঘা জমি দেওয়ার চুক্তিতে ভাড়া করে।
মামলায় সাত আসামির মধ্যে মমতাজ উদ্দিন, নজরুল ইসলাম মজনু, আমির হামজা, জাকির হোসেন, জালাল গাজি, হাসমত আলীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। এর মধ্যে জালাল গাজি পলাতক রয়েছে। অপর আসামি নাইনুল ইসলামকে খালাস দিয়েছে আদালত।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন এবং আসামিপক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আজিজুর রহমান দুলুসহ পাঁচ আইনজীবী।
রায় ঘোষণার পর নিহতদের স্বজন রফিক আহমেদ বলেন, “এই রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। আমরা চাই দ্রুত এ রায় কার্যকর করা হোক।”
পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন বলেন, “চার্জশিট দাখিলের দ্রুততম সময়ের মধ্যে এ রায় ঘোষণা করা হলো। এই রায়ে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।”
“রায় ঘোষণার পর দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের কাঠগড়া ভাঙচুরের ঘটনার মতো ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণই প্রমাণ করে যে তারা কতটা দুর্ধর্ষ,” বলেন তিনি।
মতামত দিন