২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর, ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানকে গুরুত্ব দিচ্ছে দুই দেশ
দুই দেশের মেগা ইভেন্টগুলো স্মরণীয় করে রাখতে চলমান সমন্বয়কে আরও জোরদার করতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ ও ভারত। এছাড়া মার্চে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আসন্ন বাংলাদেশ সফরের প্রস্তুতির দিকে মনোনিবেশ করছে ঢাকা ও দিল্লি।
২০২১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ৫০ বছর, ভারতের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীর অনুষ্ঠানকে দুই দেশ গুরুত্ব দিচ্ছে।
শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের (এফওসি) বৈঠকে এই বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হয়। ভারতীয় পররাষ্ট্র সচিব হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সভাপতিত্বে বাংলাদেশ থেকে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন এতে অংশ নেন।
বাংলাদেশের পররাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে দিল্লিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোহাম্মদ ইমরান, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব (পূর্ব) মাশফি বিনতে শামস এবং বাংলাদেশের পররাষ্ট্র, বাণিজ্য ও পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিরা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
ভারতীয় প্রতিনিধি দলে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র, বাণিজ্য ও শিল্প, পানিসম্পদ ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার নিরবচ্ছিন্ন গতি এবং জনগণের মধ্যে সম্পর্কের স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে উভয় দেশ একমত হয়েছে।
উভয়পক্ষই কোভিড-১৯ সহযোগিতা, বাণিজ্য, সংযোগ, উন্নয়ন অংশীদারিত্ব, বিদ্যুৎ, জ্বালানি, পানিসম্পদ, আঞ্চলিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার সীমান্ত ব্যবস্থাপনা, নিরাপত্তা ইস্যু এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা বিষয়ে আলোচনা করেন।
বিমান চলাচল সহজতর করার লক্ষ্যে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে "এয়ার বাবল" চুক্তি নবায়ন হওয়ায় উভয়পক্ষ সন্তুষ্টি জানিয়েছে।
ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, সবার আগে প্রতিবেশী নীতির আওতায় উপহার হিসেবে ভারতের কোভিশিল্ড টিকার ২০ লাখ ডোজ ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার নিদর্শন বলে দুই পক্ষই প্রশংসা করেছে।
এ সময় দু'দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষে অনুষ্ঠানের বিষয়েও আলোচনা হয়।
২০২১ সালে ভারতের প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বাংলাদেশি তিন বাহিনীর কন্টিনজেন্ট অংশ নেয়ায় উভয়পক্ষ তাদের প্রশংসা করেন।
উভয়পক্ষই ১৯৭১ সালের বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধের সময় ভারতীয় ও বাংলাদেশ বাহিনী এবং জনগণের ত্যাগের কথা উভয় দেশের বর্তমান প্রজন্মকে স্মরণ করিয়ে দেয়ার জন্য এই অনুষ্ঠানের গুরুত্ব তুলে ধরেন।
২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বরে দুদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভার্চ্যুয়াল সম্মেলনে পর ২২-২৬ ডিসেম্বর ভারতের আসাম রাজ্যের রাজধানী গুয়াহাটিতে বাংলাদেশ ও ভারতের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবি-বিএসএফ মহাপরিচালক পর্যায়ের ৫১তম সীমান্ত সম্মেলন, ৬ জানুয়ারি ২০২১ যৌথ নদী কমিশন-জেআরসির টেকনিক্যাল কমিটির বৈঠক, ১২ জানুয়ারি ২০২১ বাংলাদেশ ও ভারতের পুলিশ প্রধানের মধ্যে প্রথমবারের মতো সংলাপ, ২৩ জানুয়ারি ২০২১ বিদ্যুৎ খাতের সহযোগিতা সম্পর্কিত ১৯তম সচিব-পর্যায়ের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকের কথা তুলে ধরা হয়।
এর আগে ২৮ জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিতীয় কনস্যুলার সংলাপ অনুষ্ঠিত হয়।
উভয়পক্ষই মার্চে বাংলাদেশ ও ভারত প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে সম্মেলনের আগে স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায়ের বৈঠক, বাণিজ্য সচিব পর্যায়ের বৈঠক এবং যৌথ নদী কমিশনের সচিব পর্যায়ের বৈঠক করার বিষয়ে একমত হন।
দ্বিপক্ষীয় উন্নয়নের অংশীদারিত্বের মধ্যে লাইন অব ক্রেডিটের দ্রুত বাস্তবায়নের গুরুত্ব তুলে ধরে উভয়পক্ষ।
নয়াদিল্লি অবস্থানকালে মাসুদ বিন মোমেন বিজ্ঞান ভবনে প্রদর্শিত বঙ্গবন্ধু-বাপু ডিজিটাল প্রদর্শনী পরিদর্শন করবেন এবং সুষমা স্বরাজ ইনস্টিটিউট অব ফরেন সার্ভিসে (এসএসআইএফএস) ভারতীয় পররাষ্ট্র অফিসার প্রশিক্ষণার্থীদের সাথে মতবিনিময় করবেন।
মতামত দিন