'৫টি পৌরসভার নির্বাচনে মোট ১৪ প্লাটুন বিজিবি, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ জন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৫৪ জন দায়িত্ব পালন করবেন এবং নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের ভিতরে ৮ জন পুলিশ ও ১২ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।'
তৃতীয় ধাপে আগামীকাল শনিবার টাঙ্গাইলের ৫টি পৌরসভা নির্বাচনের ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন সুষ্ঠু করতে পর্যাপ্ত সংখ্যাক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েনসহ সব ধরনের প্রস্ততি নিয়েছে কর্তৃপক্ষ।
শনিবার সকাল ৮ টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ চলবে।
নির্বাচনে মেয়র পদে ১৩ জন প্রার্থী, সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী ২০৬ জন এবং সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৭৭ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। ইতিমধ্যে ২ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী হয়েছেন।
এই ৫টি পৌরসভার নির্বাচনে মোট কেন্দ্র ৯১ টি, মোট ভোট কক্ষ ৬৩৩টি রয়েছে। ৯১টি কেন্দ্রর মধ্যে ৩৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ।
নির্বাচনে মোট ভোটার ২ লাখ ৩১ হাজার ৮৩৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১ লাখ ১৩ হাজার ২২ জন এবং মহিলা ভোটার ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৭ জন।
নির্বাচন সুষ্ঠু করতে ১৪ প্লাটুন বিজিবিসহ পর্যাপ্ত সংখ্যাক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
এই ৫ পৌরসভায় কে বসবেন পৌর পিতার আসনে এ নিয়ে চলছে নানা হিসাব-নিকাশ। পৌর এলাকার অলিগলি থেকে শুরু করে বিভিন্ন এলাকায় পোস্টারে-পোস্টারে ছেয়ে গেছে।
টাঙ্গাইল পৌরসভা
টাঙ্গাইলে পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে ৩ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী এস এম সিরাজুল হক আলমগীর, বিএনপি’র প্রার্থী মাহমুদুল হক সানু এবং ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী আব্দুল কাদের।
এ ছাড়া ১৮টি সাধারণ ওয়ার্ডে ৮৭ জন এবং ৬টি সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ৩৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এ পৌরসভা নির্বাচনে মোট ভোটার ১ লাখ ২৪ হাজার ৪২৫ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ৬৩ হাজার ৫৭১ জন এবং মহিলা ভোটার ৬০ হাজার ৮৫৪ জন।
মোট ৪৫টি কেন্দ্রর মধ্যে ২০টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এবং ২৫টি কেন্দ্র সাধারণ। মোট ভোট কক্ষ ৩৩৫টি।
টাঙ্গাইল সদরে পৌর নির্বাচনে মূলত আওয়ামী লীগের প্রাথী ও বিএনপি’র প্রার্থীর মধ্যে দ্বিমুখী লড়াই হবে। এ পৌরসভা নির্বাচনে বর্তমান মেয়র জামিলুর রহমান মেয়র আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাননি।
মির্জাপুর পৌরসভা
এ পৌর সভা নির্বাচনে ২ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালমা আক্তার ও বিএনপি’র প্রার্থী শফিকুল ইসলাম।
৯টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১০ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭ জন প্রার্থী রয়েছেন। এই পৌরসভার ১ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এ পৌরসভায় মোট ভোটার ২১ হাজার ৬৬৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ২০৪ জন এবং মহিলা ভোটার ১১ হাজার ৪৬৫ জন।
মোট ১০টি কেন্দ্রের মধ্যে ২টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এবং ৮টি কেন্দ্র সাধারণ। মোট ভোট কক্ষ রয়েছে ৬৪টি।
ভূঞাপুর পৌরসভা
এ পৌরসভা নির্বাচনে ৩ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
তারা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী বর্তমান মেয়র মাসুদুল হক মাসুদ, বিএনপি’র প্রার্থী জাহাঙ্গীর হোসেন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল সাত্তার।
এছাড়াও এই পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ১১ জন ও সাধারণ কাউন্সিলর ৩০ জন প্রার্থী রয়েছেন।
এ পৌরসভায় মোট ভোটার ২১ হাজার ৭২৯ জন। এর মধ্যে ১০ হাজার ৮৪৫ জন পুরুষ ও ১০ হাজার ৮৮৪ জন মহিলা ভোটার রয়েছে।
মোট ১০টি কেন্দ্রের মধ্যে ৩টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এবং ৭টি কেন্দ্র সাধারণ। ভোট কক্ষ রয়েছে ৫৭টি।
এ পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী থাকায় বিএনপি’র প্রার্থী সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। তবে আওয়ামী লীগ এবং বিএনপি’র প্রার্থীর মধ্যে লড়াই হবে বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
মধুপুর পৌরসভা
এই পৌরসভা নির্বাচনে ২ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এরা হলেন- আওয়ামী লীগের প্রার্থী সিদ্দীক হোসেন ও বিএনপি’র প্রার্থী আব্দুল লতিফ পান্না।
এছাড়াও এই পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ১৩ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ৩২ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এই পৌরসভার ১ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।
এই পৌরসভার মোট ভোটার ৪১ হাজার ৬৭৯ জন। এর মধ্যে পুরুষ ভোটার ২০ হাজার ৭৫০ জন ও মহিলা ভোটার ২০ হাজার ৯২৯ জন।
মোট ১৭টি কেন্দ্রের মধ্যে ৫টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এবং ১২ টি কেন্দ্র সাধারণ। মোট ভোট কক্ষ রয়েছে ১১৭টি।
এবার এ পৌরসভা নির্বাচনে বর্তমান মেয়র মাসুদ পারভেজ আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাননি।
সখীপুর পৌরসভা
এই পৌরসভা নির্বাচনে ৩ জন মেয়র প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এরা হলেন- আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র আবু হানিফ আজাদ, বিএনপি’র প্রার্থী নাছির উদ্দিন ও স্বতন্ত্র প্রার্থী ও সাবেক মেয়র সানোয়ার হোসেন সজীব।
এ ছাড়াও এই পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ১০ জন সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর ও ৩০ জন সাধারণ কাউন্সিলর প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
এই পৌরসভার মোট ভোটার ২২ হাজার ৩৩৭ জন। এর মধ্যে ১০ হাজার ৭৮৮ জন পুরুষ ও ১১ হাজার ৫৪৯ জন মহিলা ভোটার রয়েছে।
মোট ৯টি কেন্দ্রর মধ্যে ৬টি কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ এবং ৩টি কেন্দ্র সাধারণ। মোট ভোট কক্ষ রয়েছে ৬০টি।
এই পৌরসভা নির্বাচনে নির্বাচনে আওয়ামী প্রার্থী ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর মধ্যে দ্বিমুখী লড়াই হবে।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা এ এইচ এম কামরুল হাসান প্রতিবেদকে বলেন, "নির্বাচন সুষ্ঠু করার লক্ষ্যে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। সকাল ৮ টা থেকে বিকেলে ৪ টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। ৫টি পৌরসভার নির্বাচনে মোট ১৪ প্লাটুন বিজিবি, জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৫ জন, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ৫৪ জন দায়িত্ব পালন করবেন। এ ছাড়া পুলিশ, আনসার এবং র্যাবের পর্যাপ্ত সংখ্যাক সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রের ভিতরে ৮ জন পুলিশ এবং ১২ জন আনসার দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া সাধারণ কেন্দ্রের ভিতরে ৬ জন পুলিশ এবং ১২ জন আনসার সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।"
তিনি আরো বলেন, "নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বিশৃঙ্খলা এড়াতে আইনশৃঙ্খলার বাহিনীর সদস্যরা সর্তক অবস্থানে রয়েছে। আশা করছি নির্বাচন অবাধ এবং সুষ্ঠু হবে।"
মতামত দিন