‘আমাদের ধারণা তার বিয়ের সংখ্যা ১৫-২০টির মত হবে। তার মোবাইল ফোন ঘেঁটে অনেক তথ্য ও অসংখ্য মেয়ে সাথে তার ছবি পাওয়া গেছে’
সুনামগঞ্জে ফ্রান্স প্রবাসী সেজে বিয়ে করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগে আরশাদ মিয়া ওরফে ইমাম হোসেন (৪২) নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) রাতে জগন্নাথপুর থানা পুলিশের সহযোগিতায় বিশ্বনাথ থানা পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে।
বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে জানিয়ে ওসি বলেন, “এ সম্পর্কিত আরও তথ্য বের করতে তাকে ৫ দিনের রিমান্ডে নেয়ার আবেদন জানানো হবে।”
পুলিশ জানায়, ফ্রান্সের বাসাবাড়ির আদলে সাজানো কক্ষ থেকে সফটওয়ারের মাধ্যমে ফ্রান্সের ফোন নম্বর থেকে তরুণীদের সাথে কথা বলতেন অভিযুক্ত। বিয়ে করে ইউরোপে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভনে ফেলতেন তাদেরকে।
গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩ এ ইমাম হোসেনকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার ওই তরুণী।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) দেবাশীষ শর্ম্মা বলেন, “পুলিশের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে ৪টি বিয়ে করেছে বলে জানিয়েছে ইমাম হোসেন। তবে, আমাদের ধারণা তার বিয়ের সংখ্যা ১৫-২০টির মত হবে। তার মোবাইল ফোন ঘেঁটে অনেক তথ্য ও অসংখ্য মেয়ে সাথে তার ছবি পাওয়া গেছে। সে শতাধিক মেয়ের সর্বনাশ করেছে বলে ধারণা করছি।”
ক্ষতিগ্রস্ত তরুণী বলেন, “বিশ্বনাথের রামপাশা ইউনিয়নের রামপাশা গ্রামে আমার বড় বোনের বাড়িতে আমি বসবাস করে আসছি। বড় বোন তার পূর্ব পরিচিত ঘটক বশির উদ্দিনের মাধ্যমে জানতে পারেন, একজন ফ্রান্স প্রবাসী বিয়ের জন্যে পাত্রী খুঁজছেন। আমি বিয়ের উপযুক্ত হওয়ায় আমার বোন আমার একটি ছবি ঘটককে দেন। ছবি দেখে পাত্র পক্ষ আমাকে পছন্দ করে। সে সময় ঘটক পাত্রের ফ্রান্সের নম্বর আমাদেরকে দেন। পরবর্তীতে আমার ব্যবহৃত ফোনে ইমুতে ও হোয়াটসঅ্যাপে নিজেকে ‘আরশাদ মিয়া’ পরিচয় দিয়ে কথা বলেন ওই ফ্রান্স প্রবাসী। এক পর্যায়ে ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল সিলেট শহরের একটি বাসায় অভিযুক্ত লেবু মিয়া মিন্টু, মিনু ও রুপন আহমদের উপস্থিতিতে অজ্ঞাত নিকাহ রেজিস্ট্রারের মাধ্যমে তিনি তাকে বিয়ে করেন।”
তিনি বলেন, “বিয়ের পর তার পাসপোর্ট করা, ইউরোপ নিয়ে যাওয়াসহ বিভিন্ন কাজ ও সমস্যা দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে তার বোনের কাছ থেকে প্রায় ৮ লক্ষ টাকা নেন আরশাদ মিয়া। গত বছরের ১৭ মার্চ আরশাদ মিয়ার কাছে তার কাবিনের একটি কপি অথবা নিকাহ রেজিস্ট্রারের নাম পরিচয় চাইলে তিনি কিছুই দেননি। এরপর থেকে তার সাথে যোগাযোগই বন্ধ করে দেন আরশাদ। সন্দেহ হলে আমরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারি, আরশাদ মিয়ার আসল নাম ইমাম হোসেন। তিনি ভুয়া ফ্রান্স প্রবাসী। তিনি ও অন্য আসামিরা সকলেই সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্রের সদস্য।”
‘আমাদের ধারণা তার বিয়ের সংখ্যা ১৫-২০টির মত হবে। তার মোবাইল ফোন ঘেঁটে অনেক তথ্য ও অসংখ্য মেয়ে সাথে তার ছবি পাওয়া গেছ’
মতামত দিন