‘পৃথিবীতে দ্রুততম বিলুপ্ত হতে চলা প্রাণী শকুন। তাই শকুনমাত্রই বিশ্বে “মহাবিপন্ন”। বাংলাদেশে শকুনের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আইইউসিএনের হিসেবে বাংলাদেশে মাত্র ২৬৮টি শকুন রয়েছে’
ভোলা জেলার সদর উপজেলা থেকে একটি হিমালয়ী শকুন উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। মঙ্গলবার (১৯ জানুয়ারি) বিকেলে উপজেলার ইলিশা ইউনিয়নের বটতলা এলাকা থেকে শকুনটি উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার বিকেলে ইলিশা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে মজিদ মেম্বারের বাড়ির উঠানে একটি গাছ থেকে শকুনটি মাটিতে পড়ে যায়। এ সময় স্থানীয়দের কাছে খবর পেয়ে পুলিশ বন বিভাগকে জানায়। পরে, বন বিভাগের একটিদল শকুনটি উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে তাদের হেফাজতে নেয়।
প্রাপ্তবয়স্ক এ শকুনটির ওজন ৭ থেকে ৮ কেজি। লম্বায় প্রায় ২৫ ইঞ্চি। এর একেকটি ডানার দৈর্ঘ্য ১৫ থেকে ১৬ ইঞ্চি।
বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা জানান, হিমালয়ী শকুন (Himalayan Griffon) বা হিমালয়ান গৃধিনী প্রজাতির শকুন সাধারণত হিমালয় পার্বত্য এলাকায় বাস করে। প্রতিবছর শীতের এই সময়ে বাংলাদেশে পরিযায়ন করে। পরিযায়নের পথে শকুনটি অসুস্থ হয়ে পড়ে গিয়ে থাকতে পারে।
তিনি বলেন, “পৃথিবীতে দ্রুততম বিলুপ্ত হতে চলা প্রাণী শকুন। তাই শকুনমাত্রই বিশ্বে ‘মহাবিপন্ন’ (Critically Endangered)। বাংলাদেশে শকুনের পরিস্থিতি খুবই খারাপ। আইইউসিএনের হিসেবে বাংলাদেশে মাত্র ২৬৮টি শকুন রয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “পশু চিকিৎসায় ডাইক্লোফেনাক ও কেটোপ্রোফেনের ব্যবহার, খাদ্য সংকট এবং বাসস্থান সংকটসহ নানা প্রতিকূল পরিবেশের কারণে প্রকৃতির ঝাড়ুদার হিসেবে পরিচিত এই পাখিটি হারিয়ে যাচ্ছে। শকুন বিলুপ্ত হয়ে গেলে সুন্দর একটি পাখি হারানো পাশাপাশি দেশের মানুষ অ্যানথ্রাক্স, জলাতঙ্কসহ পশু হতে সংক্রামক রোগের ভয়াবহ ঝুঁকিতে পড়বে। বন বিভাগসহ আইইউসিএন শকুন রক্ষায় বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পাখিটির প্রতি আমাদের সদয় হওয়া খুবই প্রয়োজন।”
ভোলায় বন বিভাগের সদর উপজেলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, “শকুনটি সুস্থ হলে সেটিকে সংরক্ষিত গহীন অরণ্যে অবমুক্ত করা হবে।”
মতামত দিন