পোশাক কারখানাটির শ্রমিকেরা গত চারমাস ধরে বেতন পান না বলে জানা গেছে
নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ৪ মাসের বকেয়া বেতন ও বোনাসের দাবিতে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে কুংতন অ্যাপারেলস লিমিটেডের (ফ্যাশন সিটি) শতাধিক শ্রমিক।
বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সিদ্ধিরগঞ্জ বিদ্যুৎ কেন্দ্র সংলগ্ন নারায়ণগঞ্জ-আদমজী-চিটাগাংরোড সড়কে অবস্থান নিয়ে শ্রমিকরা বিক্ষোভ করে। এতে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
এক পর্যায়ে বেলা সাড়ে ১২টার দিকে পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদের এলোপাথাড়ি লাঠিপেটা করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় বেশ কয়েকজন শ্রমিক আহত হয়। আহতদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পরে বিকেল ৩টার দিকে দিকে ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-৪ এর এসপি আইনুল হক ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মো. শরিফ আগামী ১২ জানুয়ারি শ্রমিকদের বকেয়া বেতন পরিশোধ এবং শ্রমিকদের ওপর হামলাকারীদের শাস্তির আশ্বাস দিলে শ্রমিকরা অবরোধ তুলে নেয়।
বিক্ষোভরত শ্রমিকরা জানান, কুংতন অ্যাপারেলস লিমিটেডে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার শ্রমিক কর্মরত রয়েছে। গত ৪ মাস আগে প্রতিষ্ঠানটি এক মাসের কথা বলে বন্ধ দিয়ে দেয়। এক মাস পর বেতন নিতে শ্রমিকরা প্রতিষ্ঠানে গেলে তারা আরও ১ মাসের বন্ধের কথা বলে সামনের মাসের ১২ তারিখে আসতে বলে। এরপর তারা পরের মাসে ১২ তারিখে বেতন নিতে গেলে মালিকপক্ষ আবারও পরের মাসে বেতন নিতে বলে। ডিসেম্বরে গেলে বেতন পরিশোধ না করে জানুয়ারির ৭ তারিখে যেতে বলে।
বিক্ষোভরত এক শ্রমিক বলেন, আজকে আমরা আসার পর তারা আবার আমাদের বলছে জানুয়ারি ১২ তারিখে যেতে। বেতনের প্রসঙ্গে আসলেই তারা এড়িয়ে যাচ্ছে। এ সময় আমরা প্রতিষ্ঠান মালিকের সাথে কথা বলতে চাইলে তারা আমাদের ওপর আক্রমণ করেন।
অপর এক শ্রমিক অভিযোগ করেন, “বেপজার লোকজন আমাদের বিষয়টি বলার পর আমরা শুনতেছি। এরমধ্যে বিডিআরের কয়েকজন আইসা আমাদের কয়েকজন মহিলার ওপর আক্রমণ করে। এ ঘটনায় অনেক শ্রমিক আহত। এক শ্রমিক গুরুতর আহতবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শ্রমিক বলেন, “৪ মাস যাবৎ আমরা অপেক্ষা করছি। প্রতিষ্ঠান মালিকরা আমাদের এভাবে না ঘুরায়ে নির্দিষ্ট করে কিছু বলুক। আমাদের বেতন-বোনাস পরিশোধ করে দেওয়া হোক। নয় আমাদের কোনো একটা সিদ্ধান্ত দিক।”
এ ব্যাপারে শিল্প পুলিশ-৪ এর পুলিশ সুপার আইনুল হক বলেন, “মালিক পক্ষের কাছে শ্রমিকদের দাবির বিষয়টি জানিয়েছি। আগামী ১২ তারিখের মধ্যে কারখানার সকল শ্রমিকদের পাওনা পরিশোধ করা হবে বলে তারা জানিয়েছে। পাশাপাশি শ্রমিকদের ওপর যারা হামলা চালিয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
মতামত দিন