পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আমাদের একটা বড় চ্যালেঞ্জ রোহিঙ্গা। এবছর আমরা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন শুরু করতে চাই’
ইংরেজি নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়ে মিয়ানমারের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে চিঠি লিখেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন। রবিবার (৩ জানুয়ারি) তিনি সাংবাদিকদের একথা জানিয়ে বলেন, “আমাদের একটা বড় চ্যালেঞ্জ রোহিঙ্গা। আমাদের প্রত্যাশা, এবছর আমরা প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়াটা বাস্তবায়ন করতে চাই, যাতে শুরু হয়। আমি আমার কাউন্টার পার্ট মিয়ানমারের উনাকে বলেছি, নতুন বছরে আপনাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। আর সেইসাথে আমরা চাই, এ (প্রত্যাবাসন) প্রসেসটা চালু হোক।”
২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট রাখাইনে সেনা অভিযান শুরুর পর কয়েক মাসের মধ্যে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে এসে আশ্রয় নেয়। আগে থেকে বাংলাদেশে ছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও সেই প্রত্যাবাসন আজও শুরু হয়নি।
প্রত্যাবাসনের সহায়ক পরিবেশ তৈরির জন্য চিঠিতে মিয়ানমারকে আহ্বান জানানোর কথা উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “আপনারা বলেছেন, এটা দেবেন। আপনারা বলেছেন সহায়ক পরিবেশ তৈরি করবেন, যাতে স্বেচ্ছায় যায়। কিন্তু প্রগ্রেসটা হয়নি। এজন্য রাজনৈতিক সদিচ্ছাটা দরকার।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের বিশ্বাস ও প্রত্যাশা আপনারা আপনাদের নাগরিকদের নিয়ে যাবেন। আপনাদের লোকগুলোকে নিয়ে যাবেন। এজন্য যে, এই লোকগুলো আপনাদের কাজে লাগবে।”
পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন বলেন, “লোকগুলো না নিলে অশান্তি হওয়ার সম্ভাবনা। আর অশান্তি হলে সবার জন্য অসুবিধা। তখন আমাদের যে আশা এই অঞ্চলটাকে উন্নত করা (তা ব্যাহত হবে)। কারণ শান্তি ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব না।”
রোহিঙ্গাদের মানবাধিকার পরিস্থিতি নিয়ে বৃহস্পতিবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে যে প্রস্তাব গৃহীত হয়েছে সেপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, এই প্রস্তাবের মাধ্যমে রোহিঙ্গাদের বিষয়ে “নতুন জোরালো ম্যান্ডেট” তৈরি হল বিশ্ববাসীর সামনে।
প্রস্তাবের পক্ষে ১৩২ দেশের সমর্থন দিয়েছে আর বিপক্ষে ছিল ৯ দেশ। যাতে মিয়ানমারের সঙ্গে রাশিয়া, বেলারুশ, কম্বোডিয়া, লাউ পিপলস ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক, ফিলিপিন্স, ভিয়েতনাম ও জিম্বাবুয়ে রয়েছে।
কোনো পক্ষে অবস্থান না নিয়ে এবারও ভোট দানে বিরত বিরত থেকেছে ভারত, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ভুটান, সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, নেপালসহ ২৫ দেশ।
প্রস্তাবের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে থাকা সব দেশকে রোহিঙ্গাদের পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোমেন।
মতামত দিন