রুমা কফি পান করে অচেতন হয়ে পড়লে রফিকুল তার হাত-পা বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়
মাদারীপুর শহরে পরকীয়ার জেরে প্রবাসীর স্ত্রীকে হত্যার দায়ে এক যুবকের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছে আদালত। বুধবার (৯ ডিসেম্বর) দুপুরে মাদারীপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নিতাই চন্দ্র সাহা এ সাজার আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত রফিকুল ইসলাম (৩০) সদর উপজেলার শিরখাড়া গ্রামের পান্নু হাওলাদারের ছেলে।
মাদারীপুর জজ কোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর সিদ্দিকুর রহমান সিং জানান, মাদারীপুর শহরের পাঠককান্দি এলাকার ভাড়া বাসায় থাকতেন ইতালি প্রবাসী রুহুল আমিন সাদ্দামের স্ত্রী রুমা আক্তার (২৬)। এ সময় রুমার সঙ্গে সদর উপজেলার শিরখাড়া গ্রামের পান্নু হাওলাদারের ছেলে রফিকুল ইসলামের পরকীয়ার সম্পর্ক হয়। ২০১৮ সালের ১৪ মার্চ রাতে রফিকুল রুমার বাসায় যান। এ সময় রুমা বিয়ের জন্য রফিকুলকে চাপ দেন। এর জের ধরে সেদিন রাত ১১টার দিকে রফিকুল কফির সঙ্গে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে রুমাকে দেন। রুমা ওই কফি পান করে অচেতন হয়ে পড়লে রফিকুল তার হাত-পা বেঁধে গলায় ফাঁস দিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যান।
এ ঘটনার পরের দিন সদর থানায় নিহত রুমার মা হেনা বেগম বাদী হয়ে অজ্ঞাত আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় ১৯ জন আদালতে সাক্ষ্য দেয়।
সিদ্দিকুর রহমান আরও জানান, পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তদন্ত করে জানতে পারে, রুমার সঙ্গে রফিকুলের মোবাইল ফোনে যোগাযোগ হতো। সেই সূত্র ধরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ২০১৮ সালের ২৬ মার্চ নিজ বাড়ি থেকে আসামি রফিকুলকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশের কাছে হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন তিনি এবং আদালতে জবাববন্দি দেন। ২০১৮ সালে ২ আগস্ট আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সদর মডেল থানায় থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শাহীন সরদার। এই ঘটনায় দীর্ঘ দুই বছর পরে বুধবার দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক রফিকুলকে দোষি সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি রফিকুল ইসলাম আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
নিহতের মা মামলার বাদী হেনা বেগম বলেন, "আমরা এই রায়ে খুশি। আমরা চাই দ্রুত রায় কার্যকর হোক।"
মতামত দিন