যদিও ঘটনাটিকে আত্মহত্যা বলেই দাবি অভিযুক্ত জাহিদ ও তার পরিবারের
পরকীয়ায় আসক্ত স্বামী জাহিদ হাসান মানিব্যাগে প্রেমিকার ছবি রেখেছিলেন। এর প্রতিবাদ করেন স্ত্রী ঐশী খাতুন (২০)। এ ঘটনার সূত্র ধরে সৃষ্ট কলহে তাকে পিটিয়ে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছে স্বামী জাহিদের বিরুদ্ধে। যদিও পুরো বিষয়টিকে আত্মহত্যা বলে দাবি করছেন জাহিদ ও তার পরিবার।
রবিবার (১ নভেম্বর) সকালে ঐশীর মা বাদী হয়ে জাহিদ ও তার পরিবারের কয়েক সদস্যের নামে থানায় মামলা দায়ের করেছেন। শনিবার রাতে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের আওতাপাড়া গ্রামে জাহিদের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
নিহত ঐশী ঈশ্বরদী উপজেলার সাহাপুর ইউনিয়নের চর-আওতাপাড়া গ্রামের মাহাবুল আলমের মেয়ে। তার ৮ মাস বয়সী একটি সন্তান রয়েছে।
নিহত ঐশীর মা সাহানারা বেগম জানান, ২০১৯ সালের ২৫ জানুয়ারি জাহিদের সঙ্গে তার মেয়ের বিয়ে হয় । জাহিদ পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার ছলিমপুর ইউনিয়নের মানিকনগর গ্রামের ঘরামি মো. হারুনের ছেলে। বিয়ের সময় প্রায় ৩ লাখ টাকা যৌতুক দেওয়া হয়। কিন্তু জাহিদ ও তার পরিবারের আরও চাহিদা থাকায় তাদের দাম্পত্য কলহ সৃষ্টি হয়।
ঐশীর মা জানান, মেয়ের সুখের কথা ভেবে কিছুদিন পর আরও এক লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে জাহিদকে মোটরসাইকেল কিনে দেওয়া হয়। এদিকে, বিয়ের কিছুদিন পরই স্বামী পরকীয়ায় আসক্ত বলে তাদেরকে জানান ঐশী। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) জাহিদের মানিব্যাগে তার প্রেমিকার ছবি পান ঐশী। এনিয়ে প্রতিবাদ করায় তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়। ঘটনাটি তার বাবার বাড়িতেও জানান তিনি।
শনিবার (৩১ অক্টোবর) বিকেলে বোনকে বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য ছোট ভাই অমিত তার বোনের শ্বশুরবাড়িতে যান। এসময় জাহিদ তাকে গালাগাল করে বাড়ি থেকে বের করে বের দেয়।
সাহানারা বেগম আরও জানান, শনিবার (৩১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় জাহিদ তাদেরকে ফোন করে খবর দেন ঐশি গলায় ফাঁস দিয়েছে। তারা গিয়ে দেখেন বিছানায় মেয়ের নিথর দেহ। তারপরও তারা জীবিত থাকার আশা নিয়ে তাকে উদ্ধার করে দ্রæত পাবনা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে কর্তব্যরত চিকিৎসক ঐশীকে মৃতঘোষণা করেন।
ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ নাসীর উদ্দিন লিখিত অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর নিশ্চিত হওয়া যাবে এটি হত্যা না আত্মহত্যা। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
ওসি আরও জানান, লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরপরই অভিযুক্তদেও গ্রেফতারের জন্য অভিযান চলছে। স্বামী জাহিদ ও তার পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছেন।
মতামত দিন