১৩ অক্টোবর সকাল থেকে এসআই আকবরের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে ঢাকা ট্রিবিউনকে জানিয়েছিল নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিলেট পুলিশের একটি সূত্র
সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে যুবককে নির্যাতন করে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) আকবরের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার দূর্গাপুর ইউনিয়নের বগইর গ্রামে। মাত্র ১০ হাজার টাকার জন্য রায়হান নামে এক যুবককে নিযার্তন করে হত্যায় অভিযুক্ত আকবরসহ চারজনকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ।
বুধবার (১৪ অক্টোবর) বিকেলে বগইর গ্রামে আকবরদের বাড়িতে গিয়ে কথা হয় স্বজন ও প্রতিবেশীদের সঙ্গে।
এ সময় আকবরের ছোট ভাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া সরকারি কলেজে শিক্ষার্থী আরিফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ‘‘আমার ভাই এ ধরনের কাজ করতে পারে বলে বিশ্বাস করি না। রবিবার (১১ অক্টোবর) সর্বশেষ বড়ভাইয়ের সঙ্গে কথা হয়েছিল। তখন তিনি বলেন, বিপদে আছি। অফিসে ঝামেলা হয়েছে সবাইকে দোয়া করতে বলিস। এরপর থেকে আর যোগাযোগ নেই।’’
উল্লেখ্য, ১৩ অক্টোবর সকাল থেকে এসআই আকবরের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে ঢাকা ট্রিবিউনকে জানিয়েছিল নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিলেট পুলিশের একটি সূত্র।
আরও পড়ুন- হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত এসআই আকবর ‘লাপাত্তা’
সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (মিডিয়া) জ্যোতির্ময় সরকার বলেছিলেন, এসআই আকবর হোসেনকে ১২ অক্টোবর বরখাস্ত করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। তার লাপাত্তা হয়ে যাওয়ার বিষয়টি জানা নেই।
আকবরের বাবার নাম জাফর আলী ভূঁইয়া। তিন ভাই ও দুই বোনের মধ্যে সবার বড় আকবর। ২০০৫ সালে কনস্টেবল হিসেবে পুলিশে যোগ দিয়ে ২০১৪ সালে পদোন্নতি পেয়ে এসআই হন তিনি।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আকবরদের গ্রামের বাড়ি। ছবি: ঢাকা ট্রিবিউনএদিকে, গ্রামে তাদের ‘আলিশান’ বাড়ি নিয়েও চলছে নানা আলোচনা। তবে পরিবারের দাবি, ওই বাড়ি নির্মাণে আকবরের কোনো অবদান নেই। শিক্ষক বাবার অবসর ভাতা ও সিঙ্গাপুর প্রবাসী ভাইয়ের টাকায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয়ে বাড়িটি নিমার্ণ করা হয়।
আকবরের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তার গ্রামের লোকজন।
আরও পড়ুন- সিলেটে পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে যুবককে হত্যার ঘটনায় মামলা
হাবিবুল্লাহ নামে গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘এমনিতেই তো কাউকে সাসপেন্ড করার কথা না। নিশ্চয় পিছনে কোনো ঘটনা আছে। তদন্ত করলে সব বের হবে আশা করি। আকবরের যে ভাই সিঙ্গাপুর থাকে সে প্রায়ই দেশে চলে আসে। তার আয়-রোজগার খুব ভালো না বলে জানি।’’
আকবরের বন্ধু মো. পারভেজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, আকবরের পক্ষে এমন হত্যাকাণ্ড ঘটানো সম্ভব বলে মনে করি না। আমরা চাই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করা হোক।
অভিযুক্ত এই পুলিশ সদস্যের ভাইয়ের দাবি, বাড়ি নির্মাণে বড় ভাই কোনো টাকা দেননি। বাবার অবসরভাতা ও সিঙ্গাপুরে থাকা আরেক ভাই মোবারক হোসেন ভূঁইয়ার টাকায় কয়েকধাপে এ বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে। এটা আমাদের দাদার থেকে পাওয়া সম্পত্তি। আমাদের পাশের আরেকটা পৈত্রিক বাড়ি বিক্রি করে এখানে নতুন করে বাড়ি নির্মাণ করেছি।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাবেদ মাহামুদ ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “আকবরের বাড়ি দূর্গাপুর ইউনিয়নের বগইর গ্রামে এটুকুই জানি। তার কিংবা তার পরিবার সম্পর্কে আমার কাছে কোনো তথ্য নেই। জেলা পুলিশ কিংবা পুলিশ সদর দপ্তর থেকেও এ বিষয়ে জানার জন্যে কোনো নির্দেশনা আমাদের কাছে আসেনি।”
মতামত দিন