ঘটনার দিন ওই কিশোরী আমাকে এসএমএস করে তাদের বাসায় যেতে বলে
মুঠোফোনে পরিচিত হওয়া এক কিশোরীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে নির্যাতনের শিকার হয়েছে রাকিব হোসেন (১৮) নামে এক তরুণ। মেয়ের সঙ্গে কথা বলার “অপরাধে” ওই কিশোরীর বাবা রাকিবকে বেধড়ক মারধর করে। পিটিয়ে ভেঙে দেওয়া হয় হাত-পা। শুধু তা-ই নয় উল্টো নির্যাতিত কিশোরের বিরুদ্ধেই অপহরণ মামলা দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে সে পুলিশি হেফাজতে চিকিৎসাধীন।
বুধবার (১২ আগস্ট) পঞ্চগড় সদর উপজেলার গড়িনাবাড়ি ইউনিয়নের মাটিগাড়া গ্রামে ঘটনাটি ঘটে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মুঠোফোনে পরিচয়ের সূত্র ধরে ওইদিন বিকেলে মাটিগাড়া গ্রামের এক কিশোরীর সঙ্গে দেখা করতে যায় রাকিব। বিষয়টি জানতে পেরে মেয়েটির বাবা বজলার রহমান ও তার লোকজন রাকিবকে ধরে বেধড়ক মারধর করে। এতে তার হাত-পা ভেঙে যায় ও একপর্যায়ে সে জ্ঞান হারায়। বিষয়টি পঞ্চগড় থানায় জানানো হলে পুলিশ প্রথমে গুরুতর আহতাবস্থায় ওই তরুণকে থানায় নিয়ে যায়। পরে তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
মারধরের শিকার তরুণ চাঁদপুরে পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যান হিসেবে কর্মরত।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সে জানায়, মাসখানেক আগে ওই কিশোরীর সঙ্গে মুঠোফোনে তার পরিচয় হয়। ঘটনার দিন ওই কিশোরী আমাকে এসএমএস করে তাদের বাসায় যেতে বলে।
“আমি সরল মনে তাদের বাড়িতে যাই এবং তাকে নিয়ে বাড়ির পাশে বেড়াতে যাই। এটি দেখার পর মেয়েটির বাবাসহ কয়েকজন তাকে মারধর করে। শুনেছি আমার নামে নাকি অপহরণ মামলা করা হয়েছে। আমি তো তাকে অপহরণ করিনি, সে আমাকে এসএমএস করে তাদের বাড়িতে যেতে বলেছে।”
রাকিবের মা রোকেয়া বেগম বলেন, “হাসপাতালে এসে দেখি আমার ছেলের হাত-পা ভেঙ্গে দিয়েছে। উল্টো তারাই আমার ছেলের নামে অপহরণ মামলা করেছে। আমি আমার ছেলের নির্যাতনকারীর বিচার চাই।”
ওই কিশোরীর বাবা মারধরের কথা স্বীকার করে বলেন, “আমার মেয়েকে মোবাইলে উত্যক্ত করেছিল রাকিব। এজন্য বাড়িতে ডেকে নিয়ে সামান্য মারধর করেছি। এরপর পুলিশকে খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে নিয়ে যায়।”
কেন অপহরণ মামলা করেছেন, এমন প্রশ্ন করলে তিনি কোনো জবাব দেননি।
এ বিষয়ে পঞ্চগড় সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি, তদন্ত) জামাল হোসেন বলেন, “আমরা রাকিবকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসি। রাতেই মেয়ের বাবা থানায় একটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন। পরে আহত তরুণকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে আসামি হওয়ায় সেখানে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে। সুস্থ হলে তাকে আদালতে নেওয়া হবে।”
মতামত দিন