কোথাও কোথাও একেকটি গর্তের গভীরতা তিন ফিটেরও বেশি। বৃষ্টির পানি জমে এসব গর্তময় রাস্তা রীতিমতো পুকুরে পরিণত হয়েছে
কুমিল্লা-নোয়াখালী আঞ্চলিক মহাসড়কের পাঁচ কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম প্রায় দেড় ঘণ্টারও বেশি সময় লাগে। বেহাল এই সড়কের কারণে যাতায়াতকারী মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। চলতি বর্ষায় দুর্ভোগ আরও বেড়েছে। সবচেয়ে ভয়াবহ অবস্থা কুমিল্লার বাগমারা বাজারের ১ কিলোমিটার, লাকসামের মিশ্রি ও জংশনের ২ কিলোমিটার রাস্তার।
এছাড়া, লাকসামের হাউজিং বাইপাসের ২ কিলোমিটার রাস্তারও বেহাল দশা।
এসব সড়কে প্রতিনিয়ত যানবাহন আটকে যাচ্ছে। কখনও কখনও উল্টে পড়ছে। কোথাও কোথাও একেকটি গর্তের গভীরতা তিন ফিটেরও বেশি। বৃষ্টির পানি জমে এসব গর্তময় রাস্তা রীতিমতো পুকুরে পরিণত হয়েছে। কাদাপানিতে থৈ-থৈ এই সড়কে পায়ে হাঁটারও উপায় নেই। গর্তের কারণে গাড়ি চলছে ধীরগতিতে। সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। এছাড়া এই মহাসড়কের সোনাইমুড়ী চাষীর হাট, নাথেরপেটুয়া, সোনাইমুড়ি-চৌরাস্তায় পিচ ঢালাই সড়কের খোয়া উঠে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, লালমাই বাজারের দক্ষিণাংশ থেকে গর্তে ভরা সড়ক শুরু হয়েছে। সড়কে কোথাও এক হাত, কোথাওবা এক ফিট পর পর বড় গর্ত। চালকরা ঝুঁকি নিয়ে ধীরে ধীরে যানবাহন চালাচ্ছেন। এই এলাকার প্রায় ৫ কিলোমিটার সড়কে এমন অবস্থা।
ঝুঁকিপূর্ণ এই সড়ক দিয়ে হাসপাতালে নেওয়ার পথে মুমূর্ষু রোগীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে বলে জানান স্থানীয়রা।
গত ঈদুল আজহার আগের দিন (৩১ জুলাই) বাগমারা বাজারে বড় গর্তে আটকে যায় নোয়াখালীগামী একটি বাস। এতে প্রায় তিন ঘণ্টা ধরে দুই পাশের গাড়ি চলাচল বন্ধ হয়ে দেখা দেয় তীব্র যানজট।
রাস্তা সরু হওয়ায় প্রায়ই এমন ঘটনা ঘটে বিজয়পুর, মনোহরগঞ্জের খিলাবাজার, বিপুলাসার ও নাথের পেটুয়া বাজার এলাকার। এ সড়কে দু’পাশে পানি নিষ্কাশনেরও কোনো ব্যবস্থা নেই।
দৌলতগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ী জসিম উদ্দিন বলেন, রাস্তার বেহাল দশার কারণে এ বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা নিয়মিত ভোগান্তিতে পোহাচ্ছেন। সড়ক খারাপ হওয়ার কারণে পণ্যবাহী যানবাহনগুলো ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে প্রায় দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করে।
কুমিল্লার চৌরঙ্গী মার্কেটের ব্যবসায়ী আবদুল আউয়াল বলেন, “গত দুই-আড়াই বছর এই দুর্ভোগ পোহাচ্ছি।”
বাস চালক কামাল হোসেন বলেন, “এ সড়কে গাড়ি চালাতে গিয়ে গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হচ্ছে। গর্তে ঢেউ তুলে গাড়ি চালাই, সড়কে নাকি পুকুরে গাড়ি চলে বোঝা যায় না!”
এ বিষয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগ কুমিল্লার নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মো. আহাদ উল্লাহ বলেন, “রাস্তার অবস্থা খারাপ হলেও করোনার কারণে সংস্কারকাজ ঠিকভাবে করা যায়নি। সংস্কারের চেষ্টা করছি।”
মতামত দিন