জেলা প্রশাসন ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখলেও চাহিদার তুলনায় ত্রাণের পরিমাণ অপ্রতুল বলে দাবি জন প্রতিনিধিদের
জামালপুরে গত ২৪ ঘন্টায় বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর পানি বেড়ে বিপদসীমার ১২৯ সেন্টিমিটার ও জগন্নাথগঞ্জ ঘাট পয়েন্টে ৩৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে জেলার ৭ উপজেলার ৫০ টি ইউনিয়ন ও ৬ পৌরসভার প্রায় ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
বৃহস্পতিবার ( ১৬ জুলাই) সকাল ৯ টার দিকে জামালপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) পানি পরিমাপক (গেজ রিডার) আব্দুল মান্নান ঢাকা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এলাকাবাসী জানায়, বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে পানিবন্দি মানুষ পরিবার পরিজন ও গৃহপালিত গরু ছাগল নিয়ে পড়েছেন চরম বিপাকে। তাদের মধ্যে বিশুদ্ধ পানি, শুকনো খাবার এবং গো-খাদ্যের র্তীব্র সংকট দেখা দিচ্ছে। বাড়ি-ঘরে পানি ঢুকে পড়ায় অনেক পরিবার বাঁধে নিরাপদ আশ্রয় নিচ্ছে।
বানভাসীদের দুর্ভোগ কমাতে জেলা প্রশাসন ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম অব্যাহত রাখলেও চাহিদার তুলনায় ত্রাণের পরিমাণ অপ্রতুল বলে দাবি করছে জন প্রতিনিধিরা। এদিকে বন্যার পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনের রেললাইন জামালপুর- দেওয়ানগঞ্জ রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। অপরদিকে বুধবার (১৫ জুলাই) বিকালে বন্যা পানির প্রবল স্রোতে মাদারগঞ্জ উপজেলার মহিষবাথান-মাহমুদপুর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ৫০ মিটার অংশ ভেঙে যায়।ফলে বাঁধ ভাঙায় ১০টি গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত হওয়ার আশংকা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে মাদারগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বাঁধ ভাঙার বিষয়টি ঢাকা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করে বলেন, “বাঁধের ভাংগা অংশ দ্রুত মেরামতের জন্য স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে।”
জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক মো.আমিনুল ইসলাম ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “বন্যার পানিতে ৭৩৯ হেক্টর জমির আমন বীজতলা, ১৬ হাজার ৬৬ হেক্টর জমির আউস ধান এবং ২১ হাজার ২৭ হেক্টর জমির পাট তলিয়ে গেছে।”
জামালপুরের সিভিল সার্জন ডা. প্রণয় কান্তি দাস জানান, দুর্গতদের স্বাস্থ্য সেবার জন্য কাজ ৮০ টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে।
জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ আবু সাঈদ বলেন, “যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধির হার তুলনামূলকভাবে কম। তাই তিনি আশা করছেন যমুনার পানি কিছুটা কমার সম্ভাবনা রয়েছে।” আগামী ২৪ ঘন্টার ভেতর যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি বা কমার বিষয়টির সার্বিক ধারনা পাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী বলেন, “জেলায় বন্যা কবলিত এলাকায় এখন পর্যন্ত ৩১০ মেক্ট্রিক টক জিআর চাল ও নগদ ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা এবং শুকনো খাবার ৪ হাজার প্যাকেট এবং গো-খাদ্য বাবদ দুই লাখ টাকা বিতরণ করা হচ্ছে।”
মতামত দিন