প্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মধ্য দিয়ে সংস্কৃতি চর্চায় নিজেদের প্রতিনিয়ত নিয়োজিত রেখেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘রিদম’-এর সদস্যরা
করোনাভাইরাসের ফলে সৃষ্ট কোভিড-১৯ এর কারণে বন্ধ সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। সব শিক্ষার্থীরা ফিরে গেছেন আপন নিবাসে, নিরাপদ আশ্রয়ে। তবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক সংগঠন “রিদম”এর কার্যক্রম কি একেবারে থেমে আছে? মোটেই না, বরং তথ্যপ্রযুক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারের মধ্য দিয়ে সবার সঙ্গে আরও বেশি সংশ্লিষ্ট হচ্ছেন “রিদম”-এর সদস্যরা। “কোয়ারেন্টাইন কভারস” নামে এক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নববর্ষ, রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী বা ঈদ–এসব উপলক্ষে ফেসবুক ও ইউটিউবের মাধ্যমে নিয়মিত গান উপহার দিচ্ছে “রিদম”।
প্রকল্পটির অন্যতম পরিচালক ও রিদম এর সহ-সভাপতি সুদীপ্ত মুখোপাধ্যায় জানান, “গৃহবন্দি অবস্থায় যাতে কাউকে হতাশায় ভুগতে না হয় আর প্রতিভায় মরচে না ধরে, এ জন্যই এই উদ্যোগ। এত কঠিন কাজ সম্পন্ন করতে পেরে আমরা খুশি, শুভাকাঙ্ক্ষীদের ভালোবাসায় আমরা ধন্য।”
"সঙ্গীত কর্মশালা ২০১৯" এর দ্বিতীয় দিনের অতিথি প্রশিক্ষক, 'যোদ্ধা' ব্যান্ডের গিটারিস্ট সাজিদুল ইসলাম জিয়াদের সাথে 'রিদম' এর সদস্য এবং শিক্ষার্থীগণ সৌজন্যে
চার বছর আগের এক হেমন্তের বিকেলে যার সূচনা হয়েছিলো, সেই রিদম এখন সম্ভাবনাময় একটি সংগঠন। প্রতিষ্ঠাকালীন সদস্য ও বর্তমান সভাপতি নাফিস জামাল অর্ণব স্মৃতিচারণ করেন, “আশিক ভাই (প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মো. আশরাফুল হক আশিক) ‘রিদম’ তৈরির পরিকল্পনা করে যখন জানালেন, তখন সামনে বহু বাধা-বিপত্তি ছিলো। এখনো নতুন সংগঠন বলে বিভিন্ন প্রতিকূলতা সামলাতে হয়। তবে সূচনালগ্নে গুণীজনদের সান্নিধ্য পাবার কারণে আমরা ইতোমধ্যে অনেকটা স্বয়ংসম্পূর্ণ হয়ে উঠতে পেরেছি।” সঙ্গীত-সংশ্লিষ্ট মানুষের আধিক্যের কারণে এখন সঙ্গীতপ্রধান সংগঠন হয়ে উঠেছে ‘রিদম’, তবে প্রতিষ্ঠাকালে এর বৈশিষ্ট্যই ছিলো শিল্প-সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখার বৈচিত্র্যপূর্ণ সহাবস্থান। সম্প্রতি চট্টগ্রামের ইস্ট ডেলটা ইউনিভার্সিটি কালচারাল ক্লাবের আমন্ত্রণে “হারমোনি অভ আর্টস” নামক অনলাইন অনুষ্ঠানেও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিত্ব করে রিদম।
২৪ জানুয়ারি ২০২০ তারিখে 'রিদম' আয়োজন করে স্ট্রিট কনসার্ট "গোধূলির ওপারে"। ছবিতে অনুষ্ঠানের অতিথি শিল্পী শাহিনুর ইসলাম শাওন এর সাথে 'রিদম' এর সদস্যগণ সৌজন্যে
পৃষ্ঠপোষকতার অভাব কিংবা বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থায় অনেকবার বিপাকে পড়েছে সংগঠনটি। তবে ২০১৬ সালের ১৪ নভেম্বর থেকে আজ অবধি বেশ কয়েকটি সফল অনুষ্ঠান, একটি শিল্প-প্রদর্শনী ও একটি সঙ্গীত কর্মশালার আয়োজন করেছে তারা। এর বাইরেও গত বছর রেডিও ঢোলের একটি অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে রিদম। এই বছর ফেব্রুয়ারিতে হেমায়েতপুরে মুজিববর্ষের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে প্রথমবারের মতো বড়ো আঞ্চলিক মঞ্চে ওঠে তারা। সবাইকে উজ্জীবিত রাখতে অনলাইনে আরও ভালো উপহার দেয়ার ব্যাপারে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ রিদমের সদস্যরা। সম্ভাবনাময় নবীনদের সাথে নিয়ে রিদম যেন নির্বিঘ্নে এগিয়ে যেতে পারে, এজন্য সবার কাছে শুভকামনাও চান রিদমের সদস্যরা
মতামত দিন